বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের ১৭৬নং হরতকীতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনটি পরিত্যাক্ত ঘোষণার দু’বছর অতিবাহিত হলেও নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীরা বিকল্পভাবে ক্লাশ করতে বাধ্য হচ্ছে। এতে করে প্রতিনিয়ত ঝুঁকিতে ক্লাস করে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিশুদের।
সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নে ১৯৭৮ সালে এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হলেও সরকারিভাবে ভবন নির্মিত হয় ১৯৯৪ সালে। চার কক্ষ বিশিষ্ট এ পাকা ভবনটির এখন চারদিক থেকে পলেস্তরা খসে খসে পড়ছে। মরিচা ধরা লোহার রড দৃশ্যমান। পিলারগুলো দাড়িয়ে রয়েছে কোন ঠেক ছাড়াই। বিদ্যালয়ের এ ভবনটি ২০২০ সালে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিত্যাক্ত ঘোষণা করেন। টানানো হয়েছে সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড। ভবনের নির্মাণের জন্য দুইবার সয়েলটেষ্ট হলেও নতুন ভবনের অপেক্ষমান তালিকায় রয়েছে বিদ্যালয়টি। যার কারণে পাঠদান কার্যক্রম চালু রাখতে বিকল্প ব্যবস্থায় স্কুল শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হচ্ছে পাশেই একটি টিনের ছাপড়াঘরে। এ বিদ্যালয়ে প্রাক থেকে ৫ম শ্রেণির মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০৩ জন।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুল রাজ্জাক গাজী জানান, বিদ্যালয় ভবনটির এ দৈন্যদশা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সরেজমিনে দেখে গেছেন। দুইবার মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। ছেলে মেয়েদের শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে খুবই কষ্ট করে ক্লাস নিতে হচ্ছে। ভবনটি ধ্বসে পড়ে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড দেয়া হয়েছে। তারপরও শিশু শিক্ষার্থীরা ভবনের আশপাশে খেলাধূলা ও ঘোরাফেরা করে।
অভিভাবক মাস্টার মো: সিদ্দিকুর রহমান, গোলাম রসুল হাওলাদার, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো: আনোয়ার হোসেন বলেন, এ বিদ্যালয়টি স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনী ভোট কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। তাই জনগুরুত্বপূর্ণ এ স্থানটিতে নতুন স্কুল ভবন নির্মাণ জরুরি।
উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুল ইসলাম বলেন, এ পরিত্যাক্ত বিদ্যালয় ভবনটি কাগজপত্রে একবার সয়েলটেস্ট হয়েছে। এ উপজেলায় তৎকালিন সময়ে ২৫টি বিদ্যালয়ের সয়েলটেস্ট করে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত অনুমোদন আসেনি। অনুমোদন পেলে টেন্ডার প্রক্রিয়ার পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: জালাল উদ্দিন জানান, হরতকিতলা পরিত্যাক্ত ভবনটি নিলামের জন্য রেজুলেশন করে নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে পাঠানো হচ্ছে। বিদ্যালয়টি নতুন ভবনের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এমএনএস