বৈশ্বিক বাজারে ফের কমেছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। মঙ্গলবার বিশ্ব বাজারে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ৯৪.২৬ ডলার থেকে ৮৪ সেন্ট (দশমিক ৯ শতাংশ) কমে হয়েছে ৯৩ দশমিক ৪২ ডলার।
আর ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুড তেলের প্রতি ব্যারেলের দাম ৮৮ দশমিক ৯৬ ডলার থেকে ৪৫ সেন্ট (দশমিক ৫ শতাংশ) কমে হয়েছে ৮৮ দশমিক ৫১ ডলার। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের আগস্টের তুলনায় চলতি বছরের আগস্টে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমেছে প্রায় ৩ শতাংশ।
এর আগে, সোমবারও বিশ্ব বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারের দাম প্রতি ব্যারেলে (এক ব্যারেল=১৫৯ লিটার) ৮৯ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ কমে ৯৭.২৬ ডলারে দাঁড়ায়। সোমবার প্রথম সেশনে যুক্তরাষ্ট্রের বেঞ্চমার্ক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের প্রতি ব্যারেলের দাম ৮২ সেন্ট কমে ৯১.২৭ ডলারে হয়। আর প্রথম সেশনে এই তেলের দাম কমে যায় ২ দশমিক ৪ শতাংশ।
গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাঁধার পর থেকেই মন্দাভাব শুরু হয়েছে জ্বালানি তেলের বাজারে। জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার পর্যবেক্ষণকারী বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, শতাংশ হিসেবে গত ৬ মাসে বিশ্ব বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ ও ডব্লিউটিআইয়ের দাম কমেছে ৯ দশমিক ৭ শতাংশ।
এদিকে, অপরিশোধিত তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীনের বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক কমার্জ ব্যাংক জানিয়েছে, করোনা মহামারির জেরে দেশজুড়ে আবাসন ব্যবসায় ধস ও সরকারের নেওয়া ‘জিরো কোভিড’ নীতির কারণে দেশটির অর্থনৈতিক গতি ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে জিরো কোভিড নীতির কারণে দেশটির শিল্প-কলকারখানাগুলোতে উৎপাদন পুরোদমে শুরু করা যাচ্ছে না। ফলে আমদানিকারকদের আপাতত অতিরিক্ত তেল কেনার অনুমতি দিচ্ছে চীনের সরকার।
দেশটির সরকার যে শিগগিরই ‘জিরো কোভিড’ নীতি থেকে সরে আসবে এমন কোনো লক্ষণও দেখতে পাচ্ছে না কমার্জ ব্যাংক। ফলে ইতোমধ্যে দেশটিতে অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। ‘চীন তেল ক্রয়ের পরিমাণ না বাড়ালে বাজার চাঙা হবে না,’ রয়টার্সকে এক বার্তায় জানিয়েছে কমার্জ ব্যাংক।
ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযান শুরুর আগ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিদিন ৫০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সরবরাহ করত রাশিয়া। সেই তেলের বড় অংশই যেত ইউরোপে। ইউক্রেনে পর রাশিয়ার ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে আসতে পারছে না রাশিয়ার জ্বালানি তেল।
তবে না এলেও চীন, ভারতসহ ইউরোপের অনেক দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে অপেক্ষাকৃত কম দামে তেল কিনছে। সরাসরি রাশিয়ার কাছ থেকে কম দামে বিভিন্ন দেশের তেল কেনাও আন্তর্জাতিক বাজার পড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ।
খুলনা গেজেট/এইচআরডি