বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ঠ নিম্নচাপ ও পূর্নিমার তিথির প্রভাবে বাগেরহাটের নদী খালের পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সোমবার (১৫ আগস্ট) দুপুরের জোয়ারে ভৈরব নদীর পানি বাগেরহাট-রুপসা পুরাতন সড়কের বিভিন্ন স্থান অতিক্রম করেছে। এর ফলে সড়কটির রহিমাবাদ-পোলঘাট এলাকার বেশকিছু স্থান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পানির চাপে পিচ উঠে খানাখন্দে পরিনত হয়েছে সড়কের বেশকিছু স্থান।রাস্তার উপর নালার সৃষ্টি হয়েছে একাধিক স্থানে। যার ফলে স্বাভাবিক যানচলাচল ব্যহত হচ্ছে সড়ক দিয়ে। অতিদ্রুত বেড়িবাঁধ দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটিকে সুরক্ষিত রাখার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সড়ক বিভাগ বলছে ইটের খোয়া ফেলে সাময়িকভাবে যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অন্যদিকে জোয়ারের পানিতে অব্যাহতভাবে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়া হচ্ছে। দুপুরের জোয়ারে বাগেরেহাট শহরের হাড়িখালি-মাঝিডাঙ্গা-পোলঘাট পিচঢালা সড়ক উপচে পানি প্রবেশ করেছে লোকালয়ে। সড়কটির মাঝিডাঙ্গা এলাকার একটি স্থান ধ্বসে গেছে। পানিতে ভেসে গেছে অনেকে ঘের ও পুকুরের মাছ। কারও কারও বসত ঘর ও রান্না ঘরে পানি উঠে গেছে। পানিতে জীবন বিষিয়ে উঠেছে হাড়িখালি-মাঝিডাঙ্গা এলাকাবাসীর।
মাঝিডাঙ্গা এলাকর কুলসুম বেগম বলেন, জোয়ারের সময় ঘরের মধ্যে হাটু পানি হয়ে যায়। উঠোন, রান্নাঘর, পায়খানা সবকিছু পানির নিচে। এভাবে কি মানুষ বাঁচতে পারে।
একই এলাকার আব্দুল মান্নান নামের এক বৃদ্ধ বলেন, ভৈরবে বেরিবাঁধ না থাকায় আমাদের এই দূরাবস্থা। রাস্তার উপরও পানি উঠে গেছে, রাস্তার কয়েক জায়গা ধ্বসে গেছে। যেকোন সময় বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে দাবি করেন তিনি।
রহিমাবাদ এলাকার গাউস খান বলেন, এত পানি কখনও দেখিনি। রাস্তা উপচে পানি গেছে আমাদের বাড়িঘরে। রাস্তার অনেক জায়গার পিচ উঠে গর্তগর্ত হয়ে গেছে। চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে রাস্তাটি। সড়ক বিভাগের দেওয়া ইটের খোয়ার উপর থেকে গাড়ি চালাতে গিয়ে দূর্ঘটনার কবলেও পড়েছেন কয়েকজন। রাস্তা টিকিয়ে রাখার জন্য রাস্তার পাশদিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মান ছাড়া কোন বিকল্প নেই।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শরিফুজ্জামান বলেন, রাস্তাটির ধ্বসে যাওয়া স্থান যতদ্রুত সম্ভব সংস্কার করা হবে। এছাড়া রাস্তা যাতে পানিতে প্লাবিত না হয় সেজন্য স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের পরিকল্পনাও রয়েছে আমাদের।
সড়ক বিভাগ, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফরিদ উদ্দিন বলেন, জোয়ারের পানি ও বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ স্থানে ইটের খোয়া দিয়ে সাময়িক চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে আবারও মেরামত করা হবে। এছাড়া বেড়িবাঁধ দেওয়ার বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলেছি।
তিনি আরও বলেন, রুপসা-বাগেরহাট পুরাতন সড়কের পোলঘাট, রহিমাবাদ এলকাটি নদীর কারণে ঝুকিপূর্ন। নদীর পাশ থেকে সরিয়ে নিরাপদ জায়গা থেকে নতুন করে রাস্তা নির্মানের বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। সেটি বাস্তবায়িত হলে এই ধরণের সমস্যা আর থাকবে না।