দেশে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে যশোরের কাঁচাবাজারে। কয়েকদিনের ব্যবধানে প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে ৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। এতে নাভিশ্বাস উঠেছে ক্রেতারা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচ বেড়েছে। ফলে পণ্য বেশি দামেই তাদের বিক্রি করতে হচ্ছে।
বুধবার যশোরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির মধ্যে সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁপে। যা প্রতি কেজি ছিলো ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। ১৫-২০ টাকা কেজির পটল ও ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকায়। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি দাম বেড়েছে ১৫-২০ টাকা।
এছাড়া, ৩০-৩৫ টাকার শশা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজিতে। ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া চিচিঙ্গা ৬০-৬৫ টাকা, ২০ টাকার ধুন্দল ৩০-৩৫ টাকা, ২৫-৩০ টাকার কাঁকরোল ও কচুরমুখি এদিন বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়। ৫০ টাকার রববটি ৬০-৭৫ টাকা। ৪০-৫০ টাকার উচ্চে-করলা এখন ৫০-৬০ টাকা, ৪০ টাকার বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। বাজারে নতুন আসা শীতকালীন সবজি শিম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ৮০-৯০ টাকার টমেটো এখন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১২০ টাকায়। ৮০-৯০ টাকার গাজর এখন ১২০-১৩০ টাকা। ১৮০ টাকার কাঁচা মরিচ এখন ২০০ থেকে ২২০ টাকা।
অপরদিকে, লাউ প্রতি পিছ ২০-৩০ টাকার স্থলে এখন ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, বাঁধাকপি ৩০-৪০ টাকা ও ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। ২০-২৫ টাকার চাল কুমড়া ৩০-৩৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার ছিলো ২৫-৩০ টাকা, যা এখন ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৩০ টাকার কাঁচাকলা ৩০-৪০ টাকা। শাকের দামও ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। ২০-২৫ টাকা কেজির লালশাক ৩০-৪০ ও ৩০ টাকার পালং শাক বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। আর ২৫ টাকার লাউ শাক বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকায়।
শহরের বড়বাজারে আসা ক্রেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, সবকিছুর দাম বাড়ছে। মাছ মাংশ খাওয়ার উপায় নেই। সবজি খেয়ে থাকবো তাও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
শহরের লোন অফিসপাড়ার মনিরুল ইসলাম বলেন, সবজির দামে আগুন। কয়েকদিনের ব্যবধানে সব কিছুর দাম বেড়েছে। কিন্তু আমাদের বেতনতো বাড়েনি। ফলে সাতদিনের বাজার দিয়ে চালাতে হবে অন্তত ১০দিন।
তিনি বলেন, নিজে না খেয়ে থাকলেও পরিবারকে তো আর না খাইয়ে রাখা যায়না। তাই ধার-দেনা করে হলেও পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিতে হচ্ছে।
বড়বাজারের সবজি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত সাহা বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে পরিবহন খরচ বাড়ায় সব পণ্যের দাম বেড়েছে। আর বেশি দামে সবজি কেনার কারণে, তাদের বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
মধ্যবিত্তরা শুধু নয়, সীমিত আয়ের মানুষ সংসার চালানো নিয়ে চরম হিমশিম খাচ্ছেন। কেউ গচ্ছিত পুঁজি ভেঙ্গে খাচ্ছেন, কেউ ধারদেনা করে চলছেন। এ কারণে যশোরের লাখো পরিবারের এখন খেয়ে পরে বেঁচে থাকা দায় হয়ে পড়েছে বলে অনেকে অভিমত ব্যক্ত করেন।