সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ১৫নং পোল্ডারের গাগড়ামারী অংশে উপকূল রক্ষা পাউবো’র বেড়িবাঁধ কেটে পাইপ স্থাপনের ঘটনায় আলোচিত যুবলীগ নেতা মোস্তাক আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি সাধন করার অভিযোগে পাউবো’র সেকশন অফিসার সাজ্জাদুল ইসলাম বাদি হয়ে গত ৪ আগষ্ট শ্যামনগর থানায় এই মামলাটি (১০/৩২৩) দায়ের করেন।
এদিকে থানায় মামলা দায়েরের পর চার দিন অতিবাহিত হলেও আলোচিত সে যুবলীগ নেতা এখনও ধরাছেয়ার বাইরে রয়ে গেছে। এছাড়া জিও টেক্সটাইল দিয়ে মোড়ানো বেড়িবাঁধ কেটে এফোঁড় ওফোঁড় করা অংশের মাটি বৃষ্টিতে সরতে থাকায় দিনকে দিন সেখানে ঝুঁকির্পূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। নদীতে জোয়ার বৃদ্ধি পেলে ওই বাঁধ ভেঙ্গে যেতে পারে।
উল্লেখ্য, গত ২ জুলাই সকালে গাবুরা ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা মোস্তাক আহমেদ গাগড়ামারী এলাকার সদ্য সংস্কারকৃত উপকূল রক্ষা পাউবো’র বেড়িবাঁধ কেটে পাইপ স্থাপনের চেষ্টা করে। বাঁধের উপরিভাগ মুড়িয়ে দেয়া জিও টেক্সটাইল সরিয়ে দিয়ে সেখানকার মাটি অপসারণ করে পানি ওঠানামার পাইপ বসাতে সে এমন কান্ড ঘটায়। খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট পোল্ডারের দায়িত্বপ্রাপ্ত পাউবো’র সেকশন অফিসার সাজ্জাদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌছালে তার উপর চড়াও হয় মোস্তাক। এমনকি তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল ত্যাগ না করলে তাকে পিটিয়ে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দিয়ে পরবর্তীতে গাবুরায় পা না দেওয়ার নির্দেশ জারি করে আলোচিত ওই যুবলীগ নেতা। নিজেকে গাবুরা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দাবি করে তিনি বলেন বাঁধে পাইপ স্থাপনে বাধার সৃষ্টি করা হলে সেখানে বাঁধ কেটে একাকার করে দেয়া হবে।
এঘটনার পর ওই কর্মকর্তা নিজের জীবনের নিরাপত্তা দাবি করে ওই দিন শ্যামনগর থানায় একটি সাধারন ডায়েরী (জিডি) করেন। পরবর্তীতে বিষয়টি উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবহিত করার পর বাঁধ কাটার ঘটনায় গাবুরা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দাবি করা মোস্তাকের বিরুদ্ধে শ্যামনগর থানায় গত ৪ আগষ্ট মামলা করেন তিনি।
এদিকে মামলা দায়েরের পর চারদিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ আলোচিত যুবলীগ নেতা মোস্তাককে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে পুলিশ সুত্রের দাবি শনিবার অভিযান পরিচালতি হলেও নদী পারাপারের সুবিধা নিয়ে বাঁধ কাটার ঘটনার একমাত্র অভিযুক্ত পালিয়ে যায়।
শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী ওয়াহিদ মুর্শেদ জানান, আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, যুবলীগের নেতা মোস্তাক উচ্চ আদালত থেকে জামিন লাভের চেষ্টা করছে। স্থানীয়রা জানিয়েছে বাঁধের ওই অংশে মোস্তাকের কোন জমি বা চিংড়ি ঘের নেই। বরং পাশের চিংড়ি ঘের মালিকদের কাছে পানি বিক্রি করার জন্য সেখানে বাঁধ কেটে পাইপ স্থাপনের চেষ্টা করে মোস্তাক।