খুলনা, বাংলাদেশ | ১৯ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২ মে, ২০২৪

Breaking News

  সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দেখালো যশোর-চুয়াডাঙ্গায় ৪২.৮ ও খুলনায় ৪২
  সাবেক ভূমিমন্ত্রীর দুর্নীতি অনুসন্ধান চেয়ে দুদকে আবেদন

মোটরসাইকেলে যাত্রী নেই, কিস্তি-সংসার নিয়ে চিন্তায় তারা

নিতিশ সানা, কয়রা

উপকূলীয় অঞ্চল খুলনার কয়রায় মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে প্রায় ২ হাজারের বেশি যুবক। পেট্রোলের দাম ৮৬ টাকা থেকে একবারে ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা করায় হতাশ ভাড়ায় চালানো মোটরসাইকেল শ্রমিকরা। পেট্রোলের দাম বৃদ্ধি সাথে ভাড়া সমন্বয় করায় যাত্রী নেই, কর্মহীন হয়ে পড়েছে মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহণ করা শ্রমিকরা।

‘ইজিবাইক আর মোটর ভ্যানের কারণে আমাগের ভাড়া এমনিতেই কইমে গেছে। ৯০ টাকার পেট্রোল কিনে সারাদিনে দুই-তিনশো টাকা আয় করা খুব কঠিন হয়ে পড়িছে। এরওপর হুট কইরে পেট্রোলের দাম ৯০ টাকা দিয়ে ১৩০ টাকা হয়ে গেছে। সকাল থেকে একটাও ভাড়া হয়নি। কোন যাত্রী মোটরসাইকেলে উঠতিছে না।’ এভাবেই বলছিলেন মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহণ করা আব্দুর রাজ্জাক। ৬ সদস্যের পরিবার নিয়ে কোনরকমে চলছিলে তার সংসার। আজ পেট্রোলের দাম বাড়ায় যাত্রী ভাড়া বাড়িয়ে একটাও ভাড়া হয়নি।

আজগর আলী। তিনিও মোটরসাইকেলে যাত্রী সেবা দেন। খুলনা গেজেটেকে তিনি বলেন, ২২ বছর মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহণ করেই সংসার চালিয়েছি। ২৫ টাকা পেট্রোলের দর থেকে মোটরসাইকেল চালাচ্ছি তবে এক বারে ৪৪ টাকা কখনো বাড়েনি। হুট করে পেট্রোলের দাম বেশি বাড়ায় ভাড়া বাড়াতে হয়েছে। যাত্রী আসছে তবে ভাড়া একটু বেশি চাইলেই মোটর ভ্যানে চলে যাচ্ছে। পেট্রোলের দাম ৯০ টাকা থেকে একবারে ১৩০ টাকা হয়েছে। সকাল থেকে বসে আছি একটা ভাড়াও এখনো হয়নি। এমনিতে ভাড়া হয় না, তার উপর পেট্রোলের দাম বেড়েছ। ৯০ টাকা পেট্রোলের দাম ছিলো, ভাড়াও কম ছিলো মানুষ মোটরসাইকেলে উঠতো সারা দিনে ৩ থেকে ৪ শত টাকা আয় করতাম। সমিতির কিস্তি আর পরিবারে ৪ সদস্য নিয়ে কোনরকমে চলতো। এখন পেট্রোলের দাম বেশি, ভাড়া বেশি চাওয়ায় কেউ মোটরসাইকেলে উঠছে না। চিন্তাই আছি কিস্তির টাকা কি ভাবে শোধ করব।

আরেক মোটরসাইকেল শ্রমিক হাফিজুল ইসলাম ১৮ বছর মোটরসাইকেল চালিয়ে সংসার চালান। ২৫ টাকা পেট্রোলের দর থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত ভালোই চলছিলো তার ইনকাম। প্রতিদিন ৩/৪ শত টাকা আয় করেন। হুট করে তেলের দাম বেড়েছে ৯০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা তবে কেউ বেশি ভাড়া দিতে চাচ্ছে না। সকালে ১৪০ টাকা করে ২ লিটার পেট্রোল কিনে দুইটা ভাড়ায় ৩শত টাকা আয় হয়েছে। তেলের দামের সাথে ভাড়া বৃদ্ধি না করলে মোটরসাইকেল চালিয়ে সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে পড়বে।

মোটরসাইকেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি বেল্লাল হোসেন বলেন, কয়রা উপজেলায় শ্রমিক ইউনিয়নের ১৫’শ তালিকাভুক্ত মোটরসাইকেল শ্রমিক রয়েছেন। এর বাইরে ৫ থেকে ৭ শত বেকার যুবক মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। পেট্রোলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাড়া ও বাড়ানো হয়েছে। একারনে মানুষ মোটরসাইকেলে উঠতে চাইছেনা। পেট্রোলের দাম না কমলে এসব মোটরসাইকেল শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে।




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!