বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার ৫৯ নং পশ্চিম কীর্ত্তনখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মাধবী রানী মজুমদারের বিরুদ্ধে অভিভাবকেরা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১২ টায় তাঁর এসব অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে স্কুলের অভিভাবক মহল ও এলাকাবাসিরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
তাঁদের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মাধবী রানী মজুমদার তাঁর নিজের স্বার্থে ২০১৫ সালে খুলনার একটি বিদ্যালয়ে সংযুক্তিতে (ডেপুটেশনে) যান। গত ৭ বছর ধরে তিনি এলাকার বাইরে খুলনায় বসবাস করছেন। বিদ্যালয়ে না এসে প্রতিমাসে বেতন-ভাতা উত্তোলন করে নিচ্ছেন। ওই স্কুলে শিক্ষক সংকট থাকার কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে তাঁদের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী (দপ্তরি) পাঠদান করাচ্ছেন।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া অভিভাবক রীতা ঢাকই, রেখা বসু, ইলা বসু, অমল বিশ্বাস, শিউলি মিস্ত্রী, নির্মল কুমার কীর্ত্তুনিয়া, সরস্বতী পোদ্দার, এলাকাবাসি কৃষ্ণ কান্ত গোলদার, বিপ্রদাস গোলদার, অমূল্য হালদার ও সুরেশ চৌধুরীসহ অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এভাবে কোন স্কুল চলতে পারে না। শিক্ষকের অভাবে ছেলে-মেয়েদের ঠিকমতো ক্লাস হচ্ছে না। এ অবস্থায় শিক্ষিকা মাধবী রানী মজুমদারের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বার বার অভিযোগ দিলেও নিজের ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বহাল তবিয়তে স্কুলে হাজিরা না দিয়ে বেতন-ভাতা তুলে নিচ্ছেন। আমরা অতিদ্রুত স্কুলে একজন শিক্ষক চাই।’
৫৯ নং পশ্চিম কীর্ত্তনখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জয়ন্তী রানী মূখার্জী বলেন, ‘ আমাদের স্কুলটি ৪ পোষ্টের। একজন শিক্ষিকা ডেপুটিশনে। আমাকে স্কুলের কাজে প্রায়ই উপজেলায় থাকতে হয়। তাই শিক্ষক সংকটে শিক্ষার্থীদের মারাত্মক ভাবে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।’
এ ব্যাপারে শিক্ষিকা মাধবী রানী মজুমদার মুঠোফোনে বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ে অনুমতি সাপেক্ষে আমি খুলনার বৈকালী সি এস বি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংযুক্ত (ডেপুটেশনে) আছি। এখানে আমি শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদান করাচ্ছি। কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলে আমি শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট স্কুলে যোগদান করব।’
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম জানান, শিক্ষিকা মাধবী রানী মজুমদার তাঁর ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ডেপুটেশনে যান। ওই স্কুলে শিক্ষক সংকট থাকার কারণে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। শীঘ্রই এ সমস্যার সমাধান করা হবে।
খুলনা বিভাগীয় (প্রাথমিক শিক্ষা) উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি এখানে নতুন এসেছি। বিষয়টি শুনেছি। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলেছি পূনরায় কাগজপত্র পাঠাতে। আমি ডিজি মহোদয় এবং সচিব স্যারের সাথে কথা বলে ১৫ দিনের মধ্যে ডেপুটেশন বাতিলের ব্যবস্থা করব।’