বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে স্থানীয় উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে আজ শনিবার সকালে বৃহত্তর খুলনার ইতিহাস নামক গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠিত হয়। উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরী কর্তৃপক্ষ এর আয়োজক। গ্রন্থের রচয়িতা মোহাম্মদ রেজওয়ানউল হক। ৮শ ৫০ পৃষ্ঠার এ গ্রন্থে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাটের ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে লাইব্রেরী পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ রোজী রহমান সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা জেলার প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার। স্বাগত ভাষণ দেন লাইব্রেরীর পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির। আলোচনায় অংশ নেন খুবির সাবেক কোষাধ্যক্ষ, অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান ও গ্রন্থের রচয়িতা মোহাম্মদ রেজওয়ানউল হক।
প্রধান অতিথির ভাষণে জেলা প্রশাসক বলেন, এ বইটি আজকের প্রজন্মের কাছে নতুন ক্যানভাস দিয়েছে। পাঠক এই বইটির উপর আকৃষ্ট হবে বলে তিনি আশাবাদী। এতে এ অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য স্থান পেয়েছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের পর দক্ষিণাঞ্চল অর্থনৈতিক ও যোগাযোগের দিক থেকে অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছে। এবার খুলনা শিল্পে সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে।
গ্রন্থে বৃটিশ, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের গত ৫০বছরের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর শাসনামল, পাকিস্তান সৃষ্টি, ভাষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান, সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস গ্রন্থে স্থান পেয়েছে। দুস্প্রাপ্য তথ্য গ্রন্থটিকে সমৃদ্ধ করেছে।
লেখক ১৯৪৩ সালের ২ জানুয়ারি খুলনা শহরের টুটপাড়া সেন্ট্রাল রোডে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈত্রিক নিবাস ফকিরহাট উপজেলার দেয়াপাড়া গ্রামে। ১৯৬৫ সালে সেন্ট্রাল টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে যোগদানের মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু। ১৯৮৪-১৯৮৬ বাগেরহাটের প্রথম জেলা প্রশাসক, ১৯৯২-৯৬ মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এবং ২০০১ সালে অতিরিক্ত সচিব পদ থেকে অবসর নেন। তার রচিত অপর দুই গ্রন্থ ২০১২ সালে বিবর্তিত বাগেরহাট ও ২০১৮ সালে আমার মা রহিমা খাতুন প্রকাশিত হয়।
ইতিপূর্বে ১৯২২ সালে অধ্যাপক সতীশ মিত্র যশোর-খুলনার ইতিহাস রচনা করে আজও অমর হয়ে আছেন। এটি এ অঞ্চলের প্রথম ইতিহাস। ১৯৬৯ সালে ঐতিহাসিক আব্দুল জলিল সুন্দরবনের ইতিহাস, ড. শেখ গাউস মিয়া মহানগরী খুলনার ইতিহাসের আলোকে, প্রয়াত জেলা প্রশাসক এম নুরুল ইসলাম খুলনা জেলা, মীর আমির আলী রচিত শহর খুলনার আদিপর্ব ও আবুল কালাম শামসুদ্দিন শুনু মিয়া রচিত খুলনা শহরের ইতিহাস রচিত হয়।