পাকিস্তানের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত দেশটির বৃহত্তম প্রদেশ বেলুচিস্তানে চলতি বর্ষাকালে প্রবল বর্ষণ-বন্যা ভূমিধসে গত ১ জুন থেকে এ পর্যন্ত ১১১ জনেরও বেশি নিহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে প্রদেশজুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর।
ক্ষতিগ্রস্ত এসব বাড়িঘরের মধ্যে ৬ হাজার ৭৭টি বাড়ি সম্পূর্ণ ভেসে গেছে। শুক্রবার প্রাদেশিক রাজধানী কোয়েটায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের বেলুচিস্তান বিষয়ক মুখ্য সচিব সচিব আবদুল আজাই আকিলি।
তিনি আরও জানান, দু’ মাসের প্রবল বর্ষণ ও আকস্মিক বন্যায় প্রদেশের বিভিন্ন স্থানের ১৬টি বাঁধও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এসবের মধ্যে কোনো কোনোটি প্রায় ভেঙে পড়ার অবস্থায় পৌঁছেছে। এছাড়া প্রদেশের বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ২ হাজার ৪০০ সোলার প্যানেল ধ্বংস হয়ে গেছে।
উপমহাদেশের তিন দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশে বর্ষাকাল শুরু হয় জুন থেকে, স্থায়ী হয় আগস্ট পর্যন্ত। চলতি বছর বর্ষা মৌসুমের প্রথম দুই মাসেই বিগত বিভিন্ন বছরের চেয়ে ৫০০ শতাংশেরও বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন বেলুচিস্তানের মুখ্যসচিব।
‘প্রদেশের ৩৫টি জেলার মধ্যে অন্তত ১০ জেলায় প্রবল বৃষ্টি ও বন্যার কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং প্রায় ৬৫০ কিলোমিটার সড়ক ধ্বংস হয়ে গেছে,’ সংবাদ সম্মেলনে বলেন আকিলি।
রাস্তাঘাটের বিপুল ক্ষয়ক্ষতির ফলে ভেঙে পড়েছে প্রদেশের সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা। এমনকি অন্যান্য প্রদেশের সঙ্গে সংযোগকারী মহাসড়কগুলোও বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
এই পরিস্থিতিতে খুব জরুরি প্রয়োজেন ব্যতীত লোকজনকে বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্য সচিব। তিনি আরও জানান, বেলুচিস্তানের বন্যা কবলিত বিভিন্ন অঞ্চলে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী, বেলুচিস্তান পুলিশ ও বেসামরিক প্রশাসনের কর্মীদের নিয়ে একটি সমন্বিত বাহিনী গঠন করা হয়েছে এবং সেই বাহিনী ইতোমধ্যে কাজও শুরু করেছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে সুপেয় পানি, শুকনো খাবার, কম্বল ইত্যাদি ত্রাণ হিসেবে দেওয়া হচে্ছ।
তবে প্রবল বর্ষণ-বন্যা ও ভূমিধসে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়ায় ত্রাণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা।
খুলনা গেজেট/ টি আই