তাইওয়ানে আমেরিকার হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফর নিয়ে বেইজিংয়ের উদ্বেগ বাইডেনের কাছে তুলে ধরেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গতকাল এক ফোনালাপে বাইডেনকে তাইওয়ান নিয়ে আগুন নিয়ে খেলার বিষয়ে সতর্ক করে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, যারা আগুনের সঙ্গে খেলবে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। এটা আশা করা যায় যে আমেরিকা এই বিষয়ে পরিষ্কার দৃষ্টি রাখবে। ওয়াশিংটনের ‘এক-চীননীতি’ মেনে চলা উচিত।
ফোনালাপে বাইডেনকে শি আরো বলেন, চীন দৃঢ়ভাবে তাইওয়ানের স্বাধীনতা ও সেখানে বাইরের হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে।
হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আমেরিকার প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে চীনের প্রেসিডেন্টকে জানানো হয়েছে, তাইওয়ান বিষয়ে আমেরিকার নীতিতে কোনো পরিবর্তন হয়নি এবং ওয়াশিংটন তাইওয়ানজুড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার একতরফা প্রচেষ্টার বিরোধিতা করে।
এদিকে স্বশাসিত দ্বীপ তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাইপেকে সমর্থন করার জন্য বাইডেনকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তারা নিরাপত্তা অংশীদারি বাড়াতে থাকবে।
তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান উত্তেজনার কারণ যুক্তরাষ্ট্রের হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সম্ভাব্য তাইওয়ান সফর। এমন সফর সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি ও এক চীননীতি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়া হিসেবে দেখছে বেইজিং।
এমন পদক্ষেপের পরিণতি হবে মারাত্মক বলে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে চীনের পক্ষ থেকে।
চীনের হুমকির মুখে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, যদি ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফরের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যান, তাহলে পেন্টাগন সেখানে অতিরিক্ত যুদ্ধজাহাজ, বিমান ও নজরদারি ব্যবস্থা পাঠাতে পারে।
পেলোসির বিমানকে ঘিরে বাফার জোন স্থাপনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মধ্যে। কর্মকর্তারা বলছেন, চীনসংক্রান্ত যেকোনো সম্ভাব্য ঘটনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
বাইডেন-শি ফোনালাপের আগেই চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বুধবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্র তার নিজস্ব পথে চলে এবং চীনের সীমারেখাকে চ্যালেঞ্জ করে, তাহলে অবশ্যই এর কঠোর জবাব দেয়া হবে।’
সম্প্রতি তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিরোধ দেখা দিয়েছে চীনের। বেশ কয়েকবারই চীনের বিমান তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। চীন দাবি করে থাকে, তাইওয়ান দেশটির অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাইওয়ানের স্বাধীনতা ঘোষণার পরিণতির বিষয়ে বরাবরই সতর্ক করে দিয়ে আসছে চীন। তবে যুক্তরাষ্ট্র সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তাইওয়ানে যেকোনো চীনা আগ্রাসনের সামরিক জবাব দেবে ওয়াশিংটন।