নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও মন্দির পরিদর্শন করেছে বিএনপির সাত সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। শনিবার (২৫ জুলাই) সকালে সেখানে পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও মন্দিরে আর্থিক সহায়তা করেন কমিটির সদস্যরা।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের ওই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- অনিন্দ ইসলাম অমিত, জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, অমলেন্দু অপু, অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরীন মুন্নি, সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা ও নিপুণ রায় চৌধুরী। তাদেরকে ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণের জন্য কেন্দ্র থেকে পাঠানো হয়।
সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা সাংবাদিকদের বলেন, দিঘলিয়ার ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে, মন্দিরে আক্রমণ করা হয়েছে। মন্দির তছনছ করে ফেলা হয়েছে এই বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখি না। আমরা দেখেছি এই ধরনের ঘটনা কুমিল্লা, ঠাকুরগাঁও, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঘটেছে। এখন দেখছি নড়াইলেও ঘটেছে। এসব ঘটনার যদি সুষ্ঠু তদন্ত বা বিচার হতো আমি বিশ্বাস করি এ ধরনের ঘটনা ঘটতো না।
তিনি আরও বলেন, এই সরকার মনে করে হিন্দু কমিউনিটি যদি থাকে, তাহলে তারা ভোট পাবে। আর যদি তারা ভয়ে দেশ ত্যাগ করে তাদের জমিটা কেড়ে নেওয়া যাবে। দেশে যেহেতু এখন আর ভোটের প্রয়োজন নাই, ক্ষমতায় থাকতে ভোট লাগে না, তাদের জমি, গহনা ও টাকাটুকু হলেই হয়। এই ঘটনা কারা ঘটিয়েছে তা বুঝার জন্য বেশি মেধার প্রয়োজন নেই। পুলিশ দীর্ঘ ৪৫ মিনিট কী করেছে এই প্রশ্ন আমি করছি। তাদের উপস্থিতিতে এই ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা মন্দিরে হয়েছে, বাড়িতে হয়েছে।
আমি পুলিশ কে প্রশ্ন করেছি আসামি কতজনকে করা হয়েছে। তারা বলছে- অজ্ঞাতনামা ২০০ জনের মতো। এই অজ্ঞাতনামার খেলা বন্ধ করতে হবে, অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে বিরোধী দলকে দমন করার চেষ্টা করা হয়, আর যারা নিরাপরাধ তাদের মামলায় ফাঁসানো হয়। আর যারা প্রকৃত আসামি তারা পার পেয়ে যায়।
অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, আমরা তদন্ত করতে এসেছি, রিপোর্ট আমরা কেন্দ্রের প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দিব। সেদিনের ঘটনায় আমরা অত্যন্ত ব্যথিত। এটা সরকারের ব্যর্থতা। সরকার এখন নিজেদের দোষ এড়াতে জামায়াত-বিএনপির কথা বলছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় এগুলো হয়েছে। এ ঘটনার দায়ভার সরকার ও প্রশাসনকেই নিতে হবে।
এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচটি পরিবারকে পাঁচ হাজার টাকা এবং ক্ষতিগ্রস্ত একটি মন্দিরে ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ জেলার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।