খানজাহান আলী থানার ফুলবাড়িগেট মীরেরডাঙ্গায় অবস্থিত খুলনা বিভাগের একমাত্র সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালটির বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। হাসপাতালটিতে দীর্ঘদিন ধরে মারাত্মক জনবল সংকট বিরাজ করলেও এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যথা নেই। হাসপাতালটিতে ৩ জন মেডিকেল অফিসারের পদ থাকলেও পোস্টিং রয়েছে মাত্র ১ জন। আর ১ জন ডেপুটেশনে দায়িত্ব পালন করছেন। ২ জন মেডিকেল অফিসার থাকলেও অধিকাংশ সময় রোগীদের হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্সদের উপর নির্ভর করতে হয়। হাসপাতালটিতে বছরের পর বছর ধরে নেই কোন ওয়ার্ডবয়, পরিচ্ছন্ন কর্মী, আয়া, নৈশ্যপ্রহরী ৩য় এবং ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী।
স্বাধীনতার পূর্বে ১৯৬৮ সালে ৪ একর জমির উপর ২০ শয্যা বিশিষ্ট এ সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালটি নির্মিত হয়। পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে বোঝার কোন উপায় নেই এটি বিভাগীয় পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ন একটি সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল। হাসপাতালটির কার্যক্রম সম্পর্কে প্রচার প্রচারণা না থাকার কারণে বিভাগীয় পর্যায়ে তো দূরের কথা খুলনা জেলা এবং মহানগরের অধিকাংশ জনগণ কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত নয়।
৫৪ বছর পূর্বে হাসপাতালটির নির্মাণ কাঠামো যেমনটি ছিলো এখনও ঠিক তেমনটিই রয়ে গেছে। হাসপাতালটির উন্নয়ন, আধুনিকায়ন এবং শয্যা সংখ্যাসহ এর কলেবর বৃদ্ধির জন্য এলাকার জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকাও প্রশ্নাতীত।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মাঝেমধ্যে হাসপাতালটির সংস্কার কাজ হলেও বিল্ডিং এর টেম্পার না থাকার কারণে সংস্কার কাজে কোন ফল মিলছে না। প্রতিনিয়ত বিন্ডিং এর ছাদ ভেঙ্গে এবং ছাদের প্লাস্টার খসে খসে পড়ছে। হাসপাতালের সিলিং ফ্যান ধ্বসে ভর্তিকৃত এক রোগীর বেডে পড়ে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়। ভর্তিকৃত রোগী, কর্তব্যরত ডাক্তার এবং নার্সরা সর্বদা এক ধরণের আতংক এবং ভীতির মধ্য দিয়ে সময় কাটাচ্ছে । হাসপাতালের ভবনটি বর্তমানে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছ। হাসপাতালের চারদিকে সীমানা প্রাচীর এবং নৈশ প্রহরী না থাকার কারণে সর্বদা অরক্ষিত এবং ভর্তি রোগীারাও আতংকের থাকেন।
হাসপাতালটিতে ডায়রিয়া, টিটিনাস, জলবসন্ত, জলাতঙ্কসহ সকল প্রকার সংক্রামক রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়। তন্মাধ্যে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা সর্বোচ্চ। এপ্রিল থেকে আগষ্ট মাস পর্যন্ত ডায়রিয়া রোগীর প্রচুর চাপ থাকে। এ সময় বেড ছাড়াও হাসপাতালের বারান্দায় এবং স্টোর রুমে রেখে ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। প্রতি বছর হাসপাতালটিতে প্রায় ৫ সহস্রাধিক রোগী চিকিংসা সেবা নিতে আসেন।
হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, হাসপাতালটিতে ডায়রিয়া রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ থাকলেও স্টোরেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে সংক্রামন ব্যাধির কোন ভ্যাকসিন সরবরাহ নেই।
হাসপাতালটিতে শিশু এবং মহিলাদের জন্য পৃথক কোন ওয়ার্ডের ব্যবস্থা নেই। নেই পৃথক কেবিনও। পুরুষ, মহিলা এবং শিশুদের জন্য কমন একটি ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের চিকিংসা প্রদান করা হয়।