রাজধানীর রায়েরবাজারের মিতালী রোডে ভাড়া বাসায় সাংবাদিক সোহানা পারভীন তুলির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আরেক সাংবাদিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
তদন্ত সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, জিজ্ঞাসাবাদ করা ওই সাংবাদিক আর তুলির মধ্যে ২ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। ঘটনার আগের দিন মঙ্গলবার (১২ জুলাই) ওই সাংবাদিক নিজ মোটরসাইকেলে করে তুলির বাসায় আসেন। পরে ১ ঘণ্টা পর ওই বাসা থেকে বের হয়ে যান। বের হয়ে যাওয়ার পর তুলি তার মোবাইল ফোন থেকে ওই সাংবাদিককে মেসেঞ্জারে একাধিক মেসেজ করেন। কিন্তু সেগুলোর কোনো উত্তর না দিয়ে ওই সাংবাদিক ডিলিট করে ফেলেন। এতে পুলিশের মনে সন্দেহ জাগে তাদের মধ্যে কোনো ঝামেলা চলছিল কি না। তবে জিজ্ঞাসাবাদে ওই সাংবাদিক মনোমালিন্য হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
সূত্রটি আরও জানায়, জিজ্ঞাসাবাদ করা ওই সাংবাদিকের খোঁজ তুলির বাসার নিরাপত্তাকর্মীর মাধ্যমে পায় পুলিশ। বাসাটির নিরাপত্তা কর্মী ওই সাংবাদিকের ব্যবহার করা মোটরসাইকেলের নম্বরটি পুলিশকে দেন। পরে পুলিশ মোটরসাইকেলের নম্বরের সূত্র ধরে ওই সাংবাদিকের বাসার ঠিকানা সংগ্রহ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ (বৃহস্পতিবার) নিয়ে আসে। তাকে প্রায় ১ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়ে।
এছাড়া তুলির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ডিএমপির হাজারীবাগ থানায় দায়ের করা ইউডি মামলার তদন্ত শেষে না হওয়া পর্যন্ত ওই সাংবাদিককে ঢাকা না ছাড়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানায়, মামলার তদন্তের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের বিষয়ে ওই সাংবাদিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশের কাছে থাকা তথ্যের সঙ্গে ওই সাংবাদিকের দেওয়া তথ্যের গরমিল রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) রাতে এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের ধানমন্ডি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আব্দুল্লাহ আল মাসুম বলেন, সাংবাদিক তুলির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হাজারীবাগ থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। ইউডি মামলা হলেও আমরা সকল বিষয় সামনে রেখে তদন্ত করে যাচ্ছি। মামলাটির তদন্তের স্বার্থে আজ একজনকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আমাদের কাছে থাকা কিছু তথ্যের সঙ্গে ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিভিন্ন তথ্যের ক্রস চেক করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বুধবার (১৩ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর রায়েরবাজারের মিতালী রোডের ভাড়া বাসা থেকে সোহানা পারভীন তুলির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
তুলির মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ জানিয়েছিল, তুলি আত্মহত্যা করেছেন। তুলির ঘরের দরজা ভেতর থেকে লক করা ছিল। বাসার অন্য কোনো জায়গা দিয়ে কোনও ব্যক্তির বের হওয়ার পথও ছিল না। এছাড়া তুলির শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।