ট্যানারি মালিকদের কাছে আড়তদার ও পাইকারদের বকেয়া প্রায় ২০০ কোটি টাকা। ঈদ যতোই এগিয়ে আসছে, বকেয়া টাকা নিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা। আড়তদারদের দাবি, বছরের পর বছর চলে গেলেও বকেয়া পরিশোধ করা হয় না। ফলে চামড়া কিনতে আর্থিক সংকট তৈরি হয়। ট্যানারি মালিকরা বলছেন, ব্যবসার জন্যে ভালো সময় যাচ্ছে না। তবে, ধাপে ধাপে অর্থ পরিশোধ করা হবে বলে আশ্বাস দেন তারা।
কোরবানির ঈদেই সংগ্রহ করা হয় মোট চাহিদার সিংহভাগ পশুর চামড়া। তাই এই সময়ে, পাইকার আড়তদার এবং ট্যানারি মালিকদের থাকে বাড়তি প্রস্ততি। কয়েকদিন পরই ঈদ; তাই রাজধানীর পোস্তায় শুরু হয়েছে তোড়জোর। ফাঁকা করা হয়েছে তিন শতাধিক আড়ত। তবে, আড়তদারদের দাবি, পুরো বকেয়া না পেলে চামড়া কেনা কঠিন হবে।
একজন আড়তদার বলেন, আমাদের ফার্মে যে মহাজনরা টাকা পাবে, সেখানে এক টাকাও আসেনি। দুই বছর করোনা মহামারির অজুহাত দেখিয়ে কোনো টাকা দেয়া হয়নি। তারা বলেছে, বিক্রি ভালো না, কেমিক্যালের দাম বেশি। চামড়ার তো কোনো মূল্যই দেয় না!
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান বলেন, আমরা আশা করছি, বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) পর্যন্ত যদি ৪০-৫০ শতাংশ টাকাও পেয়ে যাই, তাহলে ব্যবসায়ীরা ঘুরে দাঁড়াবে। একটা কথা প্রচলিত আছে যে, চামড়া ফেলে দেয়া হয়। আমার মনে হয়, মূল টাকা থেকে ৪০ কিংবা ৩০ শতাংশ টাকা চলে আসলেও একটা চামড়াও নষ্ট হবে না।
বলা হচ্ছে, এবারের ঈদে সংগ্রহ করা হবে ১ কোটি পিস পশুর চামড়া। সেক্ষেত্রে বকেয়া পরিশোধ করে চামড়া কেনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ট্যানারি মালিকরা। বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, যে বকেয়ার কথা বলছেন সেটা কিন্তু কয়েক যুগের বকেয়া। কয়েক বছর আগে আমরা কেস ধরে ধরে সমাধান করেছি। কিছু বকেয়া হয়তো আছে। কয়েকটি ট্যানারি দেউলিয়া হয়ে গেছে। তাদের পক্ষে কোনোভাবেই এই বকেয়া শোধ করা সম্ভব নয়। তাই এগুলো থাকবেই। ব্লেম গেম দিয়ে লাভ হবে না।
কয়েক বছরে চামড়ার বকেয়া পরিশোধ না করায় ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে অনেক আড়তদার। আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে অনেকেই।
খুলনা গেজেট/ এস আই