জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী ব্যবসায়ী গাজী আনিস মারা গেছেন। মঙ্গলবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করার পরপরই তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
মঙ্গলবার ভোর সোয়া ছয়টার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. আইউব হোসেন।
সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাব এলাকায় গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন গাজী আনিস। খবর পেয়ে শাহবাগ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করে।
জানা গেছে, গাজী আনিসের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। তিনি একসময় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি কুমারখালী উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের পান্টি বাজার এলাকার মৃত ইব্রাহিম বিশ্বাসের ছেলে।
এর আগে গত ৩১ মে জাতীয় প্রেস ক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলনে হেনোলাক্স নামে একটি কোম্পানির কাছে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা পাওয়ার দাবি করেছিলেন গাজী আনিস। তার এক বন্ধু একটি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ওই টাকা না পেয়েই আজ গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান তিনি।
মে মাসে সংবাদ সম্মেলনে যা বলেছিলেন আনিস
আনিস বলেন, ২০১৬ সালে হেনোলাক্স গ্রুপের কর্ণধার মো. নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাদের সাথে আমার সখ্যতা ও আন্তরিকতা গড়ে ওঠে। ২০১৮ সালে কলকাতায় হোটেল বালাজিতে একইসঙ্গে অবস্থানকালে তারা আমাকে হেনোলাক্স গ্রুপে বিনিয়োগ করে যথেষ্ট লাভবান হওয়ার সুযোগ আছে বলে জানান। আমি প্রথমে অসম্মতি জ্ঞাপন করলেও পরে রাজি হই। প্রাথমিকভাবে এক কোটি টাকা বিনিয়োগ করি আমি। পরে আরও ২৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করি। অধিকাংশ টাকা ঋণ হিসেবে আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবের কাছ থেকে নেওয়া।
তিনি বলেন, বিনিয়োগ করার সময় পরস্পরের প্রতি সম্মান ও বিশ্বাসের কারণে এবং তাদের অনুরোধে চূড়ান্ত রেজিস্ট্রি চুক্তি করা হয়নি, তবে প্রাথমিক চুক্তি করা হয়েছে। বিনিয়োগ পরবর্তী চূড়ান্ত রেজিস্ট্রি চুক্তিপত্র সম্পাদন করার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও তারা গড়িমসি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তারা প্রতিমাসে যে লভ্যাংশ প্রদান করতেন সেটাও বন্ধ করে দেন এবং কয়েকবার তাদের লোকজন দিয়ে আমাকে হেনস্তা ও ব্ল্যাকমেইল করেন। বর্তমানে তাদের কাছে লভ্যাংশসহ আমার ন্যায্য পাওনা তিন কোটি টাকার বেশি। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া আদালতে আমি তাদের আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করেছি, যা বিচারাধীন।