ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল উদ্দিন হত্যার প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পর্যটন শহর কক্সবাজার। ছাত্রলীগের অভিযোগ, পুলিশের সামনেই ফয়সালকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের পর পরই সড়কে বিক্ষোভে নামেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। হত্যার ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের শাস্তি ও হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার দাবিতে তারা সড়ক অবরোধ করে। একই দাবিতে তারা ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে।
রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শহরের প্রধান সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে তারা।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কক্সবাজার সদরের খুরুশকুলের ডেইলপাড়ায় ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল উদ্দিনকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে।
২৬ বছর বয়সী ফয়সাল উদ্দিন ওই ইউনিয়নের কাউয়ারপাড়া এলাকার লাল মোহাম্মদের ছেলে। তিনি কক্সবাজার সদর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
রাতে বিক্ষোভ চলাকালে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান বলেন, ‘ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন শেষে ফয়সালের ওপর প্রথম আঘাত করে একদল যুবক। তিনি পুলিশকে ফোন করে সহায়তা চাইলে সদর থানার এসআই রায়হানের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। এক পর্যায়ে আজিজ সিকদার ও তার ভাই জহির পুলিশের সামনেই ফয়সালকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে।’
এই ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। দায়িত্বে অবহেলাকারী পুলিশ সদস্য ও হত্যাকারীদের দ্রুত শাস্তির দাবি জানাই। এজন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছি। এই সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে বড় আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে।’
সন্ধ্যায় হত্যাকাণ্ডের পর পরই সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মাহমুদুল করিম মাদু বলেন, ‘বিকেলে খুরুশকুল ইউনিয়নের ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন ছিল। সম্মেলন শেষে সন্ধ্যায় সবাই ফিরছিলেন। ডেইলপাড়ায় স্থানীয় আজিজ সিকদার ও জহিরের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত ফয়সালকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও গুলি করে পালিয়ে যায়। তাকে স্থানীয়রা কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আশিকুর রহমান জানান, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। আহত দুইজনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।
পুলিশের অভিযান: আটক ৬
ফয়সালকে হত্যার ঘটনায় ছয় জনকে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাদে খুরুশকুল এলাকা থেকে তাদের আটক করার কথা জানিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম।
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত জেলা পুলিশ ও ডিবি আলাদা অভিযান চালিয়ে ছয় জনকে আটক করেছে। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অভিযান এখনও চলমান রয়েছে। যদি এ ঘটনায় পুলিশের কোন সদস্য দায়িত্বে অবহেলা করে থাকেন, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।