Edit Content
খুলনা, বাংলাদেশ
মঙ্গলবার । ২৬শে আগস্ট, ২০২৫ । ১১ই ভাদ্র, ১৪৩২

ই-পেপার

Edit Content

অনলাইনে অর্ডার দিয়ে সস্তায় কি খাচ্ছি আমরা ?

নিজস্ব প্রতিবেদক

তীব্র ক্ষুধা নিয়ে বসলেন বিভাগীয় শহর খুলনার পিকচার প্যালেস মোড়ের খাবার হোটেলে। খাওয়ার শুরুতেই দেখলেন, আপনার অর্ডারকৃত মোগলাই পরোটার মধ্যে মুরগির আধাসিদ্ধ নাড়ি-ভুঁড়ি। কেমন লাগবে ভাবুন তো! হ্যাঁ ঠিক এমনি ঘটনা ঘটে গত রবিবার (১৩ সেপ্টেম্বর)। এঘটনায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তাহমিদুল ইসলাম তমাল হোটেল মালিককে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

হোটেলে বসেই খাওয়াতে খাবারের নামে অখাদ্য পরিবেশনের বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হওয়ায় আইনী পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হয়েছে। তবে নগরীর রয়েল মোড়ে একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকরিরত মোঃ আল আমীন তিন প্যাকেট বিরিয়ানী ফুডপান্ডার মাধ্যমে অর্ডার করে এনে খেতে পারেননি। ফেলে দিতে হয়েছে নগরীর গোবরচাকার আরমান বিরিয়ানী হাউজের খাবার নামের অখাদ্য। এভাবে অনলাইনে অর্ডারকৃত খাবার হাতে পেয়ে মারাত্মক অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়ছেন ক্রেতারা। করোনা সংকটকালে ই-কমার্সের শীর্ষে অনলাইনে খাবার সার্ভিস। এতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঠকছেন ক্রেতারা। অর্ডারের স্যাম্পল অনুযায়ী সরবরাহ না করা, খাবার অনুপযোগী মানহীন খাদ্য পরিবেশন, চটকদার প্যাকেটে পঁচাবাসী খাবার মোড়কীকরণ, অনলাইনে প্রতারণামূলক ছবি পোস্টসহ নানামুখী বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন ভোক্তারা। এতে ক্রেতারা না পারছেন খাবার ফেরত দিতে, না পাচ্ছেন অর্থ ফেরত বা আইনী সহায়তা। সে জন্যই আলোচনায় এসেছে ই-কমার্স’র ফুড আইটেম। সস্তায় অনলাইনে অর্ডার করে কি খাচ্ছি আমরা ? করোনা পরিস্থিতিতে রমরমা ই-কর্মাসের শীর্ষে অবস্থান করছে অনলাইনে বা অ্যাপস্’র মাধ্যমে কেনাকাটা; আর তার শীর্ষ রয়েছে খাদ্য সামগ্রী।

ক্ষতিগ্রস্ত ক্রেতা মোঃ আল আমীনের প্রশ্ন, মাত্র ৭৮ টাকায় তিন প্যাকেট বিরিয়ানী ওরা দেয় কি করে ? ওরা স্বাস্থ্যকর খাবার দিচ্ছে কি না, সেটা সাধারণ মানুষ কিভাবে বুঝবো ? এই দুর্মূল্যের বাজারে স্বস্তা খাবারের আড়ালে অখাদ্য খাচ্ছি না তো ?

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, অত্যন্ত সুলভমূল্যের রসনা বিলাসী খাবারের অনলাইনে চটকদার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। অনলাইনে বা অ্যাপস্’র মাধ্যমে ঘরে বসেই সস্তায় মেলে এসব ফুড আইটেম।

খাবারের গুণগত মান ও স্বাস্থ্য সুরক্ষিত পরিবেশের জন্যে খ্যাত নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ের চাইনিজ প্যালেস। তাদের যাবতীয় খাবারও অনলাইনে ক্রয়ের সুযোগ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্তাধিকারী মোঃ জামাল হোসেন বলেন, “বিক্রয়ের উপর ফুডপান্ডাকে ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে হয়। খাবারের মান বজায় রেখে তাদের এই লভ্যাংশ দেয়া প্রায় অসম্ভব। সেজন্য আমি অনলাইনে খাদ্য সামগ্রীর মূল্য তালিকায় ১০ শতাংশ মূল্য বাড়িয়ে সমন্বয় করার চেষ্টা করছি; তবে খাবারের গুণগত মান ও পরিমাণ ১০০ ভাগ ঠিক রাখছি। এখানে সকলেই সৎ ভাবে ব্যবসা করলে তো ক্রেতা ঠকবে না।”

অভিযান পরিচালনাকালে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তাহমিদুল ইসলাম তমাল জানিয়েছেন, মোগলাই পরোটার মধ্যে মুরগির আধাসিদ্ধ নাড়ি-ভুঁড়ি। হোটেলের রান্নাঘর পরিদর্শনে খাবারের ডেকচিতে কয়লা এবং অন্যান্য ময়লা দেখতে পাই। এছাড়া হোটেলের রান্নাঘরের সার্বিক পরিছন্নতার অভাবও পরিলক্ষিত হয়, যা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। সে অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯’ এর বিধান লঙ্ঘনের দায়ে একটি মামলায় হোটেল মালিককে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছি। বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হওয়ায় আইনী পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হয়েছে। ই-কমার্স’র ফুড আইটেম ক্রয়ের বিষয়টি তো তদারকিকারকদের দৃষ্টিতে আসছে না; সুতারাং অনলাইনের খাদ্য সামগ্রী নিজস্ব দায়িত্বেই ক্রেতাকে কিনতে হবে।

খুলনা গেজেট/এআইএন




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন