পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে ব্যস্ত সময় পার করছেন খুলনার খামারীরা। এবার আগেভাগেই কোরবানির গরু কেনাবেচা শুরু হয়েছে। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে তারা সংগ্রহ করে এনেছেন বিভিন্ন সাইজের পশু। তবে গতবারের তুলনায় এবার গরুর দাম একটু বেশী। কারণ হিসেবে খামারীরা বলছেন, পরিবহন ও গো খাদ্যের দাম বাড়তি হওয়ায় মূলত পশুর দাম চড়া।
আগামী ১০ জুলাই দেশে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঈদুল আযহা উদযাপিত হওয়ার সম্ভাবনা। এদিনে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা আল্লাহ সন্তুষ্টি লাভের জন্য পশু কোরবানি দেন। হাটে গিয়ে বাড়তি ঝামেলা থেকে রেহাই পেতে অনেকেই ঈদের আগে পশু সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। ঈদের বাকি আছে আর মাত্র ১৩ দিন। এরমধ্যে কোরবানির গরু কেনা হয়েছে অনেকেরই।
নগরীর নিরালা সবুজবাগ এলাকায় রয়েছে কয়েকটি গরুর খামার। যদিও এদের প্রধান ব্যবসা দুধ উৎপাদন। ওই সকল খামারে বর্তমানে গড়ে উঠেছে ছোট খাটো হাট। খামার মালিকরা খুলনা জেলার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে সংগ্রহ করছেন বিভিন্ন সাইজের পশু। ইতিমধ্যে সংগ্রহকৃত অনেক গরু বিক্রি হয়ে গেছে। ঢাকা ও চিটাগং থেকে ক্রেতারা তাদের গরু পছন্দ করে নিয়ে যাচ্ছে।
কথা হয় নিরালা সবুজবাগের জমজম এগ্রোর ম্যানেজার মো: ইকরামের সাথে। তিনি বলেন, এবার কোরবানিযোগ্য ২২ গরুর মধ্যে ২০ টি বিক্রি হয়ে গেছে। ঢাকা ও চট্টগামের ক্রেতারা কিনে নিয়েছেন। এদের প্রত্যেকটির ওজন ১২০০ কেজি। বাকী আছে ২ টি। এগুলোর দাম হাকানো হয়েছে ২২ লাখ টাকা। এদের প্রত্যেকের প্রতিদিনে খাবার বাবদ ব্যয় করতে হয় ২০০ টাকা। তবে বেড়েছে গো খাদ্যের দাম। তাই গতবারের তুলনায় এবার পশুর দাম একটু চড়া।
সবুজবাগ এলাকার এসকে ডেইরী ফার্মের ম্যানেজার মো: আলমঙ্গীর হোসেন বলেন, এ খামারের বয়স ৪ বছর। ৩ বছর ধরেই কোরবানির সময় খুলনা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পশু সংগ্রহ করে এখান থেকেই বিক্রি করা হয়। গেল একসপ্তাহে তিনি ৭ টি কোরবানিযোগ্য গরু কিনে এনেছিলেন। এরমধ্যে তার ৪ টি বিক্রি হয়ে গেছে। বাকী আছে ৩ টি। এরমধ্যে ২ টির দর গত দু’দিন ধরে ক্রেতারা এসে বলছেন। দামে দরে না হওয়ায় তিনি পশু বিক্রি করেননি।
তিনি আরও বলেন, জেলার বিভিন্ন হাটে গরু আমদানির সংখ্যা বেড়েছে। তবে দালালদের দৌরাত্মের কারণে হাট থেকে তারা পশু কিনতে পারেন না। ৩০ হাজার টাকার গরু ৬০ হাজার টাকায় কিনতে হয়েছে। এরপর এ সকল পশুর পিছনে রয়েছে বিভিন্ন খরচ। ৫ টাকার চালের কুড়া এখন ১৫ টাকায় কিনতে হয়। বেড়েছে গমের ও ডালের ভুষির দাম। পাল্লা দিয়ে যেন সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। ভারত যদি এলসি বন্ধ রাখে তাহলে আমাদের মতো খামারীরা লাভের মুখ দেখবে। আর যদি এলসি খুলে দেয় তাহলে সব শেষ হয়ে যাবে। তিনি ৬ মণ ওজনের গরুর দাম হাকিয়েছেন ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
সোনাডাঙ্গার বাসিন্দা শামসুল আলমের সাথে কথা হয় নিরালা সবুজবাগের একটা ফার্মে। হাটে ঘোরাঘুরি চেয়ে আগে বাইরে থেকে পশু কেনাকে তিনি আরামদায়ক মনে করেন। তবে খামারীরা এবার গতবারের থেকে চড়া দাম চাইছেন। যাই হোক এখনও সময় আছে। সুযোগ বুঝে তিনি গরু কিনবেন বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই