টেস্টের দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশের একমাত্র লক্ষ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দ্রুত থামানো। কিন্তু দিনের প্রথম ঘণ্টায় নিজেদের লক্ষ্য ঠিকঠাক পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম ঘণ্টায় বাংলাদেশকে বেশ ভোগান দুই ক্যারিবীয় ওপেনার জন ক্যাম্ববেল ও ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। অবশেষে ক্যাম্ববেলকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙতে পেরেছেন শরিফুল ইসলাম। এরপর আরো তিন উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে খেলায় ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ ও খালেদ আহমেদ।
২৬তম ওভারে শরিফুলে বলে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ক্যাম্ববেল। ১০০ রানে ভাঙে ক্যারিবীয়দের প্রথম উইকেট। ৭৯ বলে ৪৫ করে ফেরেন ক্যাম্ববেল। এরপর ব্র্যাথওয়েটকে বোল্ড করেন মিরাজ। আর রেইফার ও বোনারকে পরপর আউট করেন খালেদ।
গতকাল শুক্রবার টেস্টের প্রথম দিনটা মোটেই ভালো কাটেনি বাংলাদেশের। ব্যাটিং ব্যর্থতা ও নিষ্প্রাণ বোলিংয়ে বাংলাদেশ ছিল ব্যাকফুটে। দিন শেষে বাংলাদেশের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ক্যারিবীয়দের ব্যাটিং। আজ শনিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দ্রুত না থামাতে পারলে বিপদ আরও বাড়বে বাংলাদেশের। তাই স্বাগতিকদের দ্রুত অলআউট করার লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নেমেছে সাকিব আল হাসানের দল।
দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিন শেষে বিনা উইকেটে ৬৭ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশের ইনিংস থেকে মাত্র ১৬৭ রান দূরে থেকে আজ শনিবার টেস্টের দ্বিতীয় দিন শুরু করেছে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের দল।
গতকাল আগে ব্যাট করে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৩৪ রানে থেমেছে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে আট বাউন্ডারিতে ৭০ বলে সর্বোচ্চ ৫৩ রান করেন লিটন দাস।
ড্যারেন স্যামি ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ।
ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু করেন দুই ওপেনার তামিম ও জয়। প্রথম ১০ ওভারে কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ, বরং স্কোরবোর্ডে তোলে ৩১ রান।
ইনিংসের সপ্তম ওভারে পরপর দুই বলে মাহমুদুল হাসান জয়কে এলবিতে আউট দেন আম্পায়ার। দুটিতেই সফল রিভিউ নিয়ে রক্ষা পান তরুণ এই ওপেনার। কিন্তু দুবার রক্ষা পেয়েও থিতু হতে পারেননি জয়। শেষ পর্যন্ত বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। দলীয় ৪১ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৩১ বলে ১০ রান করেন জয়।
এরপর দলীয় ৬৮ রানে তামিমকেও হারায় বাংলাদেশ। ২৩তম ওভারে আচমকা আলজারি জোসেফের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বল মোকাবিলা করতে গিয়ে সহজ ক্যাচ তুলে দেন তামিম। ৯ চারে ৬৭ বলে ৪৬ রান করে শেষ হয় তাঁর ইনিংস। এই দুই উইকেট হারিয়েই প্রথম সেশন শেষ করে বাংলাদেশ। বিপরীতে এই সেশনে স্কোরবোর্ডে ৭৭ রান যোগ করে সাকিব আল হাসানের দল।
বাংলাদেশকে চাপে ফেলে দেয় দ্বিতীয় সেশন। দ্বিতীয় সেশনে ২৫ ওভারে ৮২ রান তুলতে হারিয়েছে ৪ উইকেট। এই সেশনের শুরতেই বিদায় নেন দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে ফেরা এনামুল হক বিজয়। অ্যান্ডারসন ফিলিপের নিচু হয়ে ভেতরে ঢোকা বল পা বাড়িয়ে খেলতে পারেননি এনামুল। উল্টো পড়েন এলবির ফাঁদে। রিভিউ নেন এনামুল। কিন্তু বাঁচতে পারেননি। ৫ চারে ৩৩ বলে ২৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
এরপরই একই স্টাইলে বিদায় নেন শান্ত। এরপর উইকেটে এসে হাল ধরতে পারেননি আগের ম্যাচে লড়াই করা সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান সোহান। দুজনেই আজ ফিরে যান দ্রুত। ৮ রান করে বিদায় নেন সাকিব আর সোহান বিদায় নেন ৭ রান করে।
মাঝে লড়াই করেন লিটন দাস। কিন্তু হাফসেঞ্চুরি করে তিনিও আর টিকলেন না। ৫৩ রানে তাঁর প্রতিরোধ ভাঙেন আলজারি জোসেফ। তবে শেষ দিকে কিছুক্ষণ দারুণ লড়াই করেন শরিফুল ও ইবাদত। এই দুজনে ভর করেই শেষ পর্যন্ত ২৩৪ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। শরিফুল করেন ২৬ রান আর ইবাদত করেন ২১ রান।
খুলনা গেজেট/ আ হ আ