ডিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যু রহস্য ক্রমেই আরও ঘনীভূত হচ্ছে। ২০২০ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পরলোকগমন করেছিলেন আর্জেন্টাইন ফুটবল কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনা। তবে তার মৃত্যুর পর শুরু করা তদন্তে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর সব বিষয়। আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জেতানো এই কিংবদন্তির চিকিৎসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ‘অবহেলার’ কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে কিনা এখন সেই প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।
আর্জেন্টিনার একটি আদালত ম্যারাডোনার চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত আটজনের বিরুদ্ধে ‘অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ড’-এর অভিযোগ এনেছে। আদালতের ২৩৬ পৃষ্ঠার একটি নথি পর্যালোচনা করে রয়টার্স জানিয়েছে, বিচারকরা অভিযুক্তদের প্রত্যেকের অবহেলা কোনো না কোনোভাবে ম্যারাডোনার মৃত্যু ত্বরান্বিত করেছে।
এর আগে ম্যারাডোনার মৃত্যু তদন্তে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, তার সেবার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের ‘চরম অবহেলা এবং বেপরোয়া’ আচরণের কারণেই ম্যারাডোনাকে দুর্ভাগ্যজনমক পরিণতির শিকার হতে হয়।
বিভিন্ন মাদকে আসক্ত থাকা ম্যারাডোনা নানাবিধ শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। মৃত্যুর সপ্তাহ দুয়েক আগেও একটি অস্ত্রোপচার হয়েছিল তার। মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেধে যাওয়ায় সেই অস্ত্রোপচার করা হয়। সেটার পর আর্জেন্টিনায় নিজের বাসাতেই সুস্থ হয়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় ছিলেন। তবে তার দুই সপ্তাহ পরই হঠাৎ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ৬০ বছর বয়সে মারা যান তিনি।
অভিযুক্ত ৮ জন হলেন ম্যারাডোনার পারিবারিক চিকিৎসক ও নিউরোসার্জন লিওপোল্ডো লুক, মনোবিদ অগাস্তিনা কোসাচোভ, মনোবিদ কার্লোস দিয়াজ, চিকিৎসা-সমন্বয়ক ন্যান্সি ফোরলিনি, নার্সিং সমন্বয়ক মারিয়ানো পেরোনি, নার্স রিকার্দো আলমিরন ও দাহিয়ানা মাদ্রিদ এবং চিকিৎসক পেদ্রো পাগলো দে স্পাগানা।
২০২৩ বা ২০২৪ এ তাদের বিচার শুরু হতে পারে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের প্রত্যেকের ৮ থেকে ২৫ বছরের সাজা হতে পারে।
অভিযুক্তরা সবাই তাদের বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের একজন মনোবিদ অগাস্তিনা কোসাচোভের আইনজীবী বলেছেন, ‘যেকোনো মূল্যে কাউকে না কাউকে দোষী সাব্যস্ত করার চেষ্টা চলছে।’