খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ডেঙ্গুতে একদিনের ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১ হাজার ২১৪

ট্রাক্টরের মাটি পড়ে পাকা সড়কে কাঁদা, দুর্ভোগে জীবননগরবাসী

জীবননগর প্রতিনিধি

চলমান ট্রাক্টর থেকে মাটি পড়েছে পাকা সড়কে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় সড়কে তৈরি হয়েছে কাঁদা। দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকার লোকজন। জীবননগর উপজেলার প্রধান প্রধান সড়কে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, জীবননগর-কালীগঞ্জ মহাসড়কের বাঁকা ব্রিকফিল্ড এলাকায় অনিক, বিবিএম, আওয়াল, এনবিএমসহ পাঁচটি ইটভাটা রয়েছে। প্রতিটি ভাটার মালিক মহাসড়কের পাশে ইট তৈরির জন্য মাটি জমা করেছেন। এসব জমা করা মাটির কারণে সড়ক সরু হয়ে গেছে। আর ভাটায় মাটি আনার সময় ট্রাক্টর থেকে মাটি পড়ছে রাস্তায়। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন বয়সের মানুষ ও যানবাহন।এছাড়াও উপজেলার ভৈরব ও করতোয়া নদীর পাশের সড়ক গুলো কাদা-পানি একাকার। ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। একের পর এক দুর্ঘটনায় পড়ছে মোটরসাইকেল। শুক্রবার দিবাগত রাত পর্যন্ত কয়েক দফা হালকা বৃষ্টি হওয়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।ফলে গত তিন দিনে দুটি সড়কে যানবাহন চলাচল সীমিত হয়ে পড়েছে। শুক্রবার দুপুর থেকে গতকাল দুপুর পর্যন্ত সড়ক দুটিতে অন্তত ৬০ থেকে ৭০টি মোটরসাইকেল কাদায় পিছলে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। গতকাল সড়ক দুটিতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে ভয়ে ভয়ে নিম্নগতিতে কয়েকজনকে মোটরসাইকেল চালাতে দেখা গেছে। কাদায় সড়কের পাশের লোকজন ও ব্যবসায়ীরাও দুর্ভোগে পড়েছেন।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জীবননগর উপজেলার করতোয়া ও ভৈরব নদী খননের মাটি উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করেছে স্থানীয় কিছু মহল। এখন মনোহরপুর, আন্দুলবাড়িয়া ও বাঁকা ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামের সামনে এলাকার প্রভাবশালীরা টাকার বিনিময়ে নদীর পাড়ের মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন। এসব মাটি আশপাশের গ্রামের বসতভিটা ভরাট করার জন্য নেয়া হচ্ছে। এছাড়াও এসব মাটি যাচ্ছে জেলা ও জেলার বাইরের বিভিন্ন ইটভাটায়। মাটি নেয়ার জন্য সড়ক দিয়ে দিনরাত চলাচল করে ট্রাক্টর ও ট্রলি। পরিবহনের সময় মাটি পড়ে সড়কে। গত দুইদিন কয়েক দফা বৃষ্টি হওয়ায় সড়কে কাদাপানির সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সড়কে চলাচল করা দায় হয়ে পড়েছে।

সড়কে মাটি পড়া নিয়ে শনিবার ফেসবুকে পোস্ট দেন স্থানীয় সাংবাদিক মুন্না। তিনি বলেন, ইটভাটার মাটি পড়ে রাস্তা বেহাল হচ্ছে। পাকা রাস্তা এখন কাচা রাস্তায় পরিণত হয়েছে। দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে, তবে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের চোখে এগুলো পড়ে না।

প্রতিদিন মোটরসাইকেলে বাড়িতে যাওয়া-আসা করেন কয়া গ্রামের মাহাবুল তিনি বলেন, মাটির ট্রাকের জন্য বিপদে আছি। এতদিন ধুলার মধ্যে ছিলাম। এখন কাদার মধ্যে আছাড় খেতে হচ্ছে। প্রশাসনকে জানালেও বিষয়টি তারা দেখছে না।

সীমান্ত ইউনিয়নের যাদবপুর গ্রামের অনিক ফয়সাল বলেন, জনগণের উচিত অবরোধ করে কঠোরভাবে আন্দোলন করা। কিছু মানুষের জন্য জনগণ কেন কষ্ট করবে?

বাঁকা পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা জাহিদ হাসান রাব্বি বলেন, ইটভাটার লাইসেন্সবিহীন ট্রাক্টর রাস্তায় চললে প্রশাসন কিছুই বলে না। এ গাড়িগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

হাসাদাহ এলাকার ইকরাম বলেন, ইটভাটার মাটি রাখার কারণে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে ভয় লাগে। বড় গাড়ি আসলে সাইড দেওয়া যায় না। ইটভার মাটি রাখার কারণে রাস্তা সরু হয়ে গেছে। প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিবিএম ইটভাটার ব্যবস্থাপক আব্দুল সালাম বলেন,সমস্যা হয় বলে আমরা রাস্তার পাশে মাটি জমা করি না। তবে অন্য ভাটার মালিকেরা রাস্তার পাশে মাটি জমা করেন। আর সবাই তো মহাসড়ক দিয়ে ভাটার মাটি আনে। আমরা একা মাটি আনি না।

আওয়াল ব্রিকসের মালিক আবুল বাশার বলেন, আমাদের কোনো স্টাইক (মাটির ঢিবি) রাস্তার পাশে নেই। আমরা মহাসড়ক দিয়ে ভাটায় কোনো মাটি আনি না। মাঠের মধ্যে একটি সড়ক আছে, সেখান দিয়ে ভাটায় মাটি আনি।

এ বিষয়ে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। ভাটার মালিকেরা কথা দিয়েছেন, মাটি আনার পর প্রতিদিন রাস্তা পানি দিয়ে পরিষ্কার করে দেবেন। এ ছাড়া তাঁরা দ্রুত সড়কের পাশ থেকে মাটির স্টাইক সরিয়ে ফেলবেন। সড়কের পাশে স্টাইক রাখার কোনো সুযোগ নেই।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!