খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  যাত্রাবাড়িতে ব্যাটারিচালিত অটো রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ, সংঘর্ষে দুই পুলিশ আহত
  জুলাই গণহত্যা : ৮ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক মাসে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ
  বিশ্বকাপ বাছাই : মার্টিনেজের ভলিতে পেরুর বিপক্ষে জয় পেল আর্জেন্টিনা

বিয়ে করতে চাপ দেওয়ায় প্রেমিকাকে হত্যা, পরকীয়া প্রেমিক গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, নোয়াখালী

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে ডিভোর্সি তরুণীকে গলা, হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যার ৪দিন পর অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত শাহাদাত হোসেন জীবন (২৪) উপজেলার পিতাম্বরপুর গ্রামের মিনহাজি বাড়ির নির্মাণ শ্রমিক শামছুল আলম দিলসাদের ছেলে।

রোববার (১৯ জুন) সকালে সোনাইমুড়ী থানার পুলিশ উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের পিতাম্বরপুর গ্রামের একটি সবজি ক্ষেত থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চুরি, মোবাইল ও ওড়না উদ্ধার করে। এর আগে গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের পিতাম্বরপুর গ্রামের মিনহাজি বাড়ি থেকে পরকিয়া প্রেমিককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সে পেশায় একজন নির্মাণ শ্রমিক।

রোববার দুপুর পৌনে ১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো.শহীদুল ইসলাম।

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার বলেন, ভিকটিম ফেরদাউস পাখির গত ২০০৮ সালে প্রথম বিয়ে হয় । সেখানে ৩ বছর সংসার করার পর স্বামীর সাথে তার ছাড়াছাড়ি হয়। প্রথম স্বামীর সংসারে জান্নাত নামের তার একটি ৬ বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে ভিকটিমের পুনরায় অন্য ব্যক্তির সাথে ২য় বিয়ে হয়। ৬ মাস পর ২য় স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়। এরপর চলতি বছরের ২৯ মে আসামি জীবনের সাথে ভিকটিমের ফেইসবুক মেসেঞ্জারে পরিচয় হয়। তারপর হতে দুইজনের মাঝে মাঝে কথা হয় এবং তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের মধ্যে একবার দৈহিক সম্পর্ক হয় । আসামি জীবন বিবাহিত ছিল। কিন্তু এ বিষয়ে ভিকটিম কিছুই জানতো না। পরবর্তীতে আসামি বিবাহিত জেনে ভিকটিম আসামিকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে আসামি তাকে এড়িয়ে যায়। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়।

গত মঙ্গলবার ১৫ জুন পরস্পর যোগাযোগ করে সোনাইমুড়ীর পিতাম্বরপুর গ্রামের মিনহাজী বাড়ির সংলগ্ন সবজি ক্ষেতের দক্ষিণ পাশে নির্জন স্থানে যায় । সেখানে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আসামি তার নিকটে থাকা ছোরা বের করে প্রথমে ভিকটিমের গলায় পোচ দেয় । এতে ভিকটিম মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য আসামি ভিকটিমের গলায় উপর্যুপরি ধারালো ছোরা দিয়ে জবাই করে হাত ও পায়ের রগ গোলাকৃতিভাবে কেটে দেয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামি এ চাঞ্চল্যকর হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে ।

জানা যায়, এ হত্যাকান্ডের পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সোনাইমুড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম দেওটি ইউনিয়নের বাসিন্দা নুর নবী, স্বপন ও সেনবাগ উপজেলার মনির ও আবু সুফিয়ানকে আটক করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের পিতম্বপুর গ্রামের দিলসাদের ছেলে ও নিহত নারীর পরকিয়া প্রেমিক জীবনকে মোবাইল ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে আটক করা হয়। পরে তার জবানবন্দির ভিত্তিতে আসামিকে নিয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত মালামাল উদ্ধার করা হয়।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে জান্নাতুল তাঁর বড় বোনের বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর রাত ৮টার পর থেকে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাঁর কোনো খোঁজ পায়নি।পরে বুধবার সকাল ৮টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি উঁচু সবজি ক্ষেত থেকে পাখির গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পাখির ভাই বাদী হয়ে সোনাইমুড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

খুলনা গেজেট/ এস আই

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!