পদ্মা সেতু নি:সন্দেহে বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আগের থেকে খুলনা অঞ্চলের উন্নয়ন নতুন ধারার সৃষ্টি হবে। ইতিমধ্যে নতুন নতুন সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে। কিন্তু একে পর্যটন শিল্পের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে ব্যবহার করার জন্য যে প্রস্তুতি দরকার তা একেবারে অনুপস্থিত।
ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব সুন্দরবন খুলনার সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আযম ডেভিড খুলনা গেজেটের সাথে একান্ত সাক্ষাতকারে এ কথাগুলো বলেন।
পর্যটন খাতের এ নেতা বলেন, পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের একটি লালিত স্বপ্ন। আর তা বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে ২৫ জুন। ওইদিন সারাদেশের মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে কাঙ্খিত সেতুটি। জীবনযাত্রা সহজ থেকে সহজতর হবে। স্বল্প সময়ের মধ্যে অধিক দূরত্বে যেতে পারবে মানুষ। উন্নয়ন হবে মানুষের জীবন মান। গতি বাড়বে ব্যবসা বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন। যাকে ঘিরে রয়েছে বিভিন্ন দেশের মানুষের মধ্যে রহস্য। সেই রহস্যের সন্ধানে বনে ছুটে আসেন পর্যটকরা। আর এটাকে কেন্দ্র করে খুলনায় গড়ে উঠেছে পর্যটন শিল্প। যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নের কারণে খুলনার পর্যটন শিল্পের বিপ্লব ঘটবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রয়েছে কিছু প্রতিবন্ধকতা। যা নিরসনে সুন্দরবন কর্তৃপক্ষ পর্যটন ব্যবসায়ীদের সাথে কোন কথা বলেনি।
সেতু উদ্বোধনের পর কিছু মানুষ সরাসরি মোংলা পার হয়ে বনে যাওয়ার চেষ্টা করবে। কিন্তু মোংলাতে কোন ঘাট বা জেটি নাই। সেখানে অবকাঠামোগত কোন উন্নয়ন নাই। পর্যটকদের থাকার তেমন ভাল হোটেল নাই। যদিও বর্তমানে পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন বন্ধ রাখা হয়েছে। আগামী তিনমাস পরে উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বনের দ্বার। আর তখন যে চাপ পড়বে তা মোকাবিলা করার প্রস্তুতি পর্যটন শিল্প ও বন কতৃপক্ষের নেই। এসকল প্রতিবন্ধকতা সফলভবে মোকাবেলা করে ব্যবসায়িক সাফল্য বনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বন কতৃপক্ষ ও ট্যুর অপারেটরদের যৌথ প্রস্তুতি নেওয়া একান্ত দরকার। না হলে পর্যটন শিল্পে ধস নামবে বলে তিনি মনে করেন।
অপর পর্যটন ব্যবসায়ী শাহ জামান খান পাপুল বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হবে। তখন ট্যুর অপারেট খুলনা কেন্দ্রিক আর হবেনা। মোংলা ও শরণখোলা কেন্দ্রিক পরিচালিত হবে পর্যটন ব্যবসা। পর্যটকদের সংখ্যা বাড়বে। বাড়বে পর্যটন শিল্পের সংখ্যা। সেতু উদ্বোধনের পর সবকিছুরই সুযোগ সুবিধা তৈরি হবে। পর্যটনের উন্নতি অবশ্যই হবে। পর্যটকদের চাপের মোকাবেলা করার কোন পূর্ব প্রস্তুতি তাদের নেই। এ সংক্রান্ত কোন আলোচনা বন বিভাগের সাথে তাদের হয়নি। এজন্য তিনি স্থানীয় জনতা, বন কতৃপক্ষ ও ট্যুর অপারেটরদের সমন্বয়ে একটি সেল গঠনের কথা বলেন। না হলে এ শিল্প সুন্দরবন কেন্দ্রিক থাকবেনা বলে তিনি উল্লেখ করেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই