চলতি অর্থ বছরে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে রাজস্ব ঘাটতি দেখা দিয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক নির্ধারিত রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা থেকে ঘাটতি পড়েছে ২৯২ কোটি টাকা। যা মূল রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার ৩০ শতাংশ।
অর্থ বছরের শুরুতেই করোনা পরিস্থিতির কারনে রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। ভোমরা বন্দরের কাস্টমস হাউজের চলমান নির্মাণ কাজ শেষ হলে রাজস্ব আদায় বাড়বে বলে দাবি বন্দর সংশ্লিষ্ঠদের।
ভোমরা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরে (জুন-জুলাই) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয় ৯৮৫ কোটি ৪ লাখ টাকা। গেল ১০ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬৯২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে কম রয়েছে ২৯২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ি, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা, আগস্টে ৫৭ কোটি ৬৩ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৭৩ কোটি ৩০ লাখ, অক্টোবরে ৭১ কোটি ২৮ লাখ, নভেম্বরে ৭৪ কোটি ২৮ লাখ, ডিসেম্বরে ৫৫ কোটি ২৭ লাখ, জানুয়ারিতে ৫৯ কোটি ২০ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ৬২ কোটি ৪১ লাখ, মার্চে ৯৩ কোটি ৯৮ লাখ, এপ্রিলে ৫৭ কোটি ৪৬ লাখ ও মে মাসে ৪৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। বর্তমানে জুন মাস চলমান রয়েছে।
গত অর্থবছরের ১১ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৭২৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরে একই সময়ের তুলনায় ৩৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে।
ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম খান জানান, কলকাতা থেকে ভোমরা বন্দরের দূরত্ব কম হওয়ায় বন্দরটি দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানির সুযোগ বেশি। তবে বন্দরটি দিয়ে সকল পণ্য আমদানি রপ্তানির সুযোগ নেই। এ কারণে ভোমরা বন্দর সম্ভাবনাময় হওয়ার পরও রাজস্ব ঘাটতি পড়ছে। এখানে একটি কাস্টমস হাউজ প্রয়োজন। সেটি হলেই সকল পণ্য আমদানি-রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হবে। তখন বর্তমানে যে রাজস্ব আদায় হচ্ছে সেটি আগামীতে দ্বিগুণ হয়ে যাবে।
ভোমরা শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার আমীর মামুন খুলনা গেজেটকে জানান, চলতি অর্থবছরের ১০ মাস অতিবাহিত হয়েছে। চলছে জুন মাস। এখনো জুলাই মাস বাকি আছে। অর্থ বছরের শুরুতেই করোনা পরিস্থিতির কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে বিরুপ প্রভাব ছিল। এ কারণে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় হয়নি। মূলত বন্দর ব্যবহারকারীদের পণ্য আমদানি-রফতানির ওপর রাজস্ব আদায় নির্ভর করে। এখনো এক মাস ২০দিন সময় সামনে রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও ঘাটতির ব্যবধান কিছুটা কমে আসবে।
ভোমরা স্থল বন্দরের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম বলেন, ভোমরা বন্দরে কাস্টমস হাউজ নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। আগামী ২২ ডিসেম্বর এটি উদ্বোধন হবে। তখন সকল পণ্য আমদানি-রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হবে। ফলে রাজস্ব আদায় আরোও বেড়ে যাবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই