বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, অর্থমন্ত্রী প্রস্তাবিত বাজেটে বেশ কিছু পদেক্ষপ নিয়েছেন। যেই লক্ষ্যে বাজেট তৈরি করা হয়েছে সেই লক্ষ্যগুলো হয়তো ঠিক আছে। কিন্তু বাজেটে সেই লক্ষ্যগুলোর প্রেক্ষিতে যে পদক্ষেপগুলো নেয়ার কথা বলা হয়েছে সেগুলো অপরিপূর্ণ। এছাড়া নীতি কৌশলেও অসম্পূর্ণ। পাশাপাশি বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার পরিকল্পনা অপর্যাপ্ত। বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটে পরবর্তী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, এবারের বাজেট এমন সময় দেয়া হলো, যখন সারা বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত। করোনার অভিঘাত থেকে বের হতে না হতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ায় আমদানি-রপ্তানি ও উৎপাদনে বাঁধা সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে চাহিদা মেটানো সংকটময় হয়েছে। বিশ্বের অন্য দেশের মতো এই সংকটে বাংলাদেশও পড়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির চাপ অত্যন্ত বেশি। পাশাপাশি বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়েছে।
প্রকল্প ব্যয় বেশি। এসব বিষয় আগামীতে মোকাবিলা করতে হবে সরকারকে। এর মধ্যে বাজেট প্রণয়ন করা নি:সন্দেহে দুরুহ ছিল। তারপরও অর্থমন্ত্রী বাজেট প্রস্তাব দিয়েছেন। এই বাজেটে তিনি ৬টি চ্যালেঞ্জের কথা বলেছেন। সেগুলো হলো- মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা; গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারের মূল্য বৃদ্ধির ভর্তুকির জন্য অর্থের সংস্থান করা; বৈদেশিক অর্থের ব্যবহার এবং প্রকল্পগুলোর নির্ধারিত সময়ে শেষ করা; শিক্ষা-স্বাস্থ্য প্রকল্প যথা সময়ে বাস্তবায়ন করা; অভ্যন্তরীণ মল্যূসংযোজন কর আহরণের পরিমাণ বৃদ্ধি ও ব্যক্তি আয়করদাতা বৃদ্ধি করা; টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা ও রির্জাভ সন্তোষজনক রাখা।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, এই ৬টি বিষয়কে সামনে রেখে দেখি কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সারা বাজেটে মূল্যস্ফীতির কথা বহুবার এসেছে। কিন্তু মূল্যস্ফীতি নিয়ে যা বলা হয়েছে তা পর্যাপ্ত নয়।
আমরা বলেছিলাম চাল-চিনি ইত্যাদি পণ্যে কর ছাড় দেয়া। কিন্তু গম ছাড়া আর কিছু দেখছি না। ব্যক্তি আয়কর সাড়ে ৩ লাখ করার কথা বলেছিলাম। কিন্তু সেটা ৩ লাখেই রয়েছে। অথচ এসব লোকদের চেয়ে অন্য খাতের যারা ভালো আছেন তাদের জন্য বিশেষ করে করের ক্ষেত্রে, বেতনের বাইরে বিভিন্ন ধরনের যে অ্যালাউন্স থাকে সুযোগ-সুবিধা যেমন; যাতায়াত, বাড়ি ভাড়া স্বাস্থ্য সেবা ইত্যাদির ক্ষেত্রে যে করমুক্ত আয় সীমা, সেটা কিন্তু সাড়ে ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকায় উন্নতি করা হয়েছে। এটা তো একেবারে দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য করা হয়নি। এরকম অনেক উদাহরণ আছে। অর্থমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন গ্যাস-বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা হবে। তার মানে দাম বাড়ানো হবে। এই সময় এটা বাড়ানো ঠিক হবে না। এতে জনগণের ব্যয়ভার বাড়বে।
খুলনা গেজেট/ আ হ আ