খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  মার্কিন শ্রম প্রতিনিধি দল ঢাকা আসছে আজ

দাওয়াত গ্রহণের আদবসমূহ (পর্ব : ২৫)

হাফেজ মাওলানা মুফতি জুবায়ের হাসান

১. কোন ব্যক্তি অপর কাউকে দাওয়াত দিলে তা গ্রহণ করা এবং কোনো ওযর (যেমন : তার দ্বীনি অথবা পার্থিব ক্ষতির আশঙ্কা) ছাড়া দাওয়াত থেকে পিছিয়ে না থাকা; কেননা, রাসূলুল্লাহ ﷺ অপর মুসলমান ভাইয়ের হক আদায়ের ব্যাপারে আলোচনা করতে গিয়ে বিশেষভাবে উল্লেখ করে বলেন,
وَإِذَا دَعَاكَ فَأجبْهُ
যখন সে তোমাকে দাওয়াত দেয়, তার দাওয়াত গ্রহণ কর। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২১৬২

তিনি আরও বলেন,
لَوْ دُعِيتُ إِلَى ذِرَاعٍ أَوْ كُرَاعٍ لأَجَبْتُ، وَلَوْ أُهْدِيَ إِلَىَّ ذِرَاعٌ أَوْ كُرَاعٌ لَقَبِلْتُ
যদি আমাকে হালাল পশুর পায়া বা হাতা খেতে ডাকা হয়, তবু আমি সেই দাওয়াত কবুল করব, আর যদি আমাকে পায়া বা হাতা হাদিয়া দেয়া হয়, আমি তা গ্রহণ করব। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২৫৬৮

২. দাওয়াত গ্রহণের ব্যাপারে ধনী ও গরীবের মাঝে ভেদাভেদ না করা; কেননা, গরীবের দাওয়াত গ্রহণ না করার মধ্যে তার মন ভেঙ্গে যাওয়ার ব্যাপার রয়েছে, তাছাড়া এর মধ্যে এক প্রকার অহঙ্কার রয়েছে, আর অহঙ্কার একটি ঘৃণিত ও নিন্দনীয় বিষয়।

একদা হাসান ইবন আলী (রা.) কতগুলো মিসকীনের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, যারা মাটির উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে খাচ্ছিল, তারপর তারা তাঁকে উদ্দেশ্য বললেন, হে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কন্যার ছেলে! তুমি কি আমাদের সাথে খেতে আসবে? তখন তিনি বললেন, হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আল্লাহ অহঙ্কারীদেরকে ভালবাসেন না, এ কথা বলে তিনি তাঁর খচ্চরের উপর থেকে নেমে গিয়ে তাদের সাথে বসে আহার করলেন।

৩. দাওয়াত গ্রহণ করার ক্ষেত্রে রাস্তার দূরত্বের কম-বেশি ভেদাভেদ না করা; যদি তার নিকট একই সময়ে দু’টি দাওয়াত আসে, তাহলে প্রথমে আসা দাওয়াতটি গ্রহণ করবে এবং অন্যটির ব্যাপারে অপারগতা প্রকাশ করবে।

৪. নফল রোজা পালনের কারণে দাওয়াতে অংশগ্রহণ করা থেকে পিছিয়ে থাকবে না, বরং সেখানে উপস্থিত হবে; অতঃপর দাওয়াত দাতা যদি তার খাওয়াতে খুশি হন, তাহলে সে রোজা ভঙ্গ করে ফেলবে; কেননা, মুমিনের মনে আনন্দ দেওয়াটা নৈকট্যপূর্ণ কাজ; অন্যথায় তাদের জন্য কল্যাণ কামনা করে দুআ করবে; রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
إِذَا دُعِيَ أَحَدُكُمْ، فَلْيُجِبْ، فَإِنْ كَانَ صَائِمًا، فَلْيُصَلِّ، وَإِنْ كَانَ مُفْطِرًا، فَلْيَطْعَمْ

“যখন তোমাদের কাউকে দাওয়াত দেয়া হয়, তখন সে যেন তা গ্রহণ করে; অতঃপর সে যদি রোজাদার হয়, তাহলে সে যেন তার (দাওয়াতকারীর) জন্য দুআ করে দেয়; আর যদি রোজাদার না হয়, তাহলে যেন সে খেয়ে নেয়।” -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৩৪১২

৫. দাওয়াত গ্রহণ করার মাধ্যমে তার মুসলিম ভাইকে মুহাব্বাত ও সম্মান করার নিয়ত করা; কেননা হাদিসে এসেছে: “প্রত্যেক কাজ নিয়তের সাথে সম্পর্কিত; আর প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিয়ত অনুযায়ী ফল পাবে।” তাছাড়া ভাল নিয়তের কারণে সাধারণ বৈধ কাজ আনুগত্যে পরিণত হয় এবং তার জন্য মুমিন বান্দাকে সাওয়াব দেয়া হয়।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের কে বুঝার ও আমল করার তাওফিক দান করুন।

(লেখক : ইমাম ও খতিব, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়)




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!