সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আকাশের মেঘপুঞ্জ নিয়ে সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়েছে। ডিএমপি পরিচালকের সূত্র দিয়ে বলা হচ্ছে, আকাশের মেঘপুঞ্জে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড গ্যাস মিশে গেছে। যেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও গুজব। তাছাড়া ডিএমপি পরিচালক নামে এমন কোনো পদও নেই পুলিশে।
ফেসবুকের পোস্টে বলা হয় (বাক্য ও বানান অপরিবর্তিত), ‘ব্রেকিং… সবাইকে সতর্ক করা হচ্ছে।। আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে কোন বৃষ্টি আসলে কেউ এটা তে ভিজবেন না। চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ড ভয়াবহ আগুনে যে, রাসায়নিক কেমিক্যাল গুলো ঝলসে গেছে। তার ফলে আকাশের মেঘ গুলোতে HYDROGEN PER OXIDE GAS টা মিশে গিয়েছে। সকলকে সতর্ক বার্তাটি প্রদান করুন, নিজে বাঁচুন, অন্য কে ও সাহায্য করুন৷ বিশেষ করে বৃদ্ধদের বৃষ্টির সময় ঘর থেকে বের হতে দিবেন না। -ডিএমপি পরিচালক’
ডিএমপির কর্মকর্তারা জানান, ডিএমপিতে পরিচালকের কোনো পদ নেই। এই পদ ব্যবহার করে প্রচার করা ম্যাসেজটি ভুয়া।
ডিএমপির মুখপাত্র উপ-কমিশনার মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘ডিএমপির পক্ষ থেকে এমন কোনো ম্যাসেজ পাঠানো হয়নি। যারা এ ধরনের তথ্য ছড়াচ্ছে তাদের শনাক্তে আমাদের সাইবার টিম কাজ করছে।’
হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের মেঘে মিশে যাওয়ার দাবির বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. জি এম গোলজার হোসাইন বলেন, ‘হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড মূলত ডিকম্পোজ হয়ে অক্সিজেন তৈরি হয়। এই এইচটুওটু (H2O2) মূলত হাইড্রোজেন আর অক্সিজেন। এটাকে ভেঙে অক্সিজেন রিলিজ হয় আর পানি তৈরি হয়। হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডকে যদি কনটেইনারে রাখা হলে উত্তাপে অক্সিজেন রিলিজ হয়ে ব্লাস্ট (বিস্ফোরিত) হয়।’
বিএম কনটেইনার ডিপোর হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের মেঘের সঙ্গে মেশার কোনো সম্ভাবনা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড সেভাবে থাকবে না। ওটা ডিকম্পোজ হয়ে যাবে। ডিকম্পোজ হয়ে গেলে অক্সিজেন বাতাসের সঙ্গে চলে যাবে, আর পানিটা নিচে থাকবে। এটা মেঘের সঙ্গে মেশার কোনো সুযোগ নেই।’
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক ছানাউল হক মন্ডল বলেন, ‘পরিবেশ দূষণ সম্পর্কিত আমাদের কোনো পূর্বাভাস থাকে না। এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারবো না। কারণ আপাতত এই ধরনের কোনো এনালাইসিস আমাদের নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটার কোনো ভিত নেই। আমার জানা মতে এই ধরনের কোনো তথ্য আবহাওয়া অধিদপ্তরে নেই বলেই জানি।’