সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কঠোর নির্দেশের পর খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অভিযানকালে জরিমানা এবং সতর্কও করা হয়েছে।
খুলনা বিভাগের ৪টি জেলায় এদিন অভিযান পরিচালনা করে ২৩টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরমধ্যে খুলনার ফুলতলার ৭টি, মাগুরার ৭টি, যশোরের ৬টি ও চুয়াডাঙ্গায় ৩টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে।
এছাড়া শেরপুরে ২৬টি, হবিগঞ্জে ৯টি, টাঙ্গাইলে ৪টি, নোয়াখালীতে ৯ চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২টি, ঢাকার ধামরাই ৪টি, বরিশালে ৭টি, নাটোরে ৭টি ও নরসিংদীতে ৫ টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করা হয়েছে। আর য়মনসিংহে অভিযানে অনুমোদন না থাকায় একটি ক্লিনিক সিলগালাসহ পাঁচটির অপারেশন থিয়েটার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হবিগঞ্জ: মাধবপুর ও চুনারুঘাট উপজেলায় বৈধ কাগজপত্র না থাকায় পাঁচটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
এরমধ্যে চুনারুঘাটের পিপলস হাসপাতাল, এন কে হাসপাতাল, সূর্যের আলো ক্লিনিক ও গ্রিন লাইন ক্লিনিকক বন্ধ করা হয়েছে। আর মাধবপুর পৌর শহরের সেবা ডায়াগনস্টিক, অ্যাপেলো ডায়াগনস্টিক, হক ডায়াগনস্টিক, প্রাইম ডায়াগনস্টিক ও তিতাস শিশু জেনারেল হাসপাতাল বন্ধ করা হয়।
শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে জানান হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন মো. নূরুল হক।
মাগুরা: শনিবার অবৈধ ও অনিবন্ধিত সাতটি প্রাইভেট ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
সেগুলো হচ্ছে- শহরের ভায়না এলাকার রোকেয়া প্রাইভেট হাসপাতাল, একতা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোম, নিরাময় প্রাইভেট হাসপাতাল, রিফাত ফার্মেসি, শাহানা মেডিকেল সাভির্সেস, অরো ডেন্টাল কেয়ার, সুখী নীলগঞ্জ প্রজেক্ট।
জেলা সিভিল সার্জন শহীদুল্লাহ দেওয়ান এ তথ্য জানিয়েছেন।
যশোর: স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার অনিবন্ধিত ও নিবন্ধনের মেয়াদোত্তীর্ণ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালায় যশোর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এ সময় যশোর শহরের পিস হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নূরুল ইসলাম ডায়াগনস্টিক সেন্টার, রোটারি হেলথ অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সিএমসি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং সেন্ট্রাল হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিবন্ধনের কাগজপত্র পায়নি স্বাস্থ্য বিভাগের টিম। সে কারণে তাদের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে নোটিশ দেয়া হয়েছে।
যশোর সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. রেহেনেওয়াজ বলেন, ডেপুটি সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানের সময় ছয়টি অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা: জেলা শহরের হাসপাতাল সড়কে অবস্থিত ২৫টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার অভিযান চালানো হয়। এর মধ্যে বৈধ কাগজপত্র না থাকায় সেন্ট্রাল মেডিকেল সেন্টার, সনো ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও চুয়াডাঙ্গা আলট্রাসনোগ্রাফি সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়া হালনাগাদ করা কাগজপত্র দেখাতে না পারায় ইসলামি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও তিসা ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে সতর্ক করা হয়েছে।
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমানের নেতৃত্বে শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ অভিযান চলে।এ সময় যেসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি তাদের সিলাগালা ও জরিমানা করা হয়।
টাঙ্গাইল: শনিবার সকাল ১০ টাকা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে চারটি অবৈধ ক্লিনিক সিলগালা ও তিনটি ক্লিনিকের মালিককে জরিমানা করা হয়েছে।
ক্লিনিকগুলো হচ্ছে- স্বদেশ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টার, পদ্মা ক্লিনিক, আমানত ক্লিনিক অ্যান্ড হসপিটাল ও ডিজিল্যাব।
এ ছাড়া অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেবা দেওয়ার অভিযোগে দি সিটি ক্লিনিককে ২০ হাজার টাকা, কমফোর্ড হাসপাতালকে ৩০ হাজার টাকা এবং ডিজিল্যাব ক্লিনিককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রানুয়ারা খাতুন এসব তথ্য জানান।