খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. আব্দুর রশিদ বলেন, সরকারি ভাবে নানা সুযোগ সুবিধা দেওয়া সত্ত্বেও প্রাথমিকে শিক্ষকদের আন্তরিকতার ঘাটতি রয়েছে। ঠিকমতো ক্লাশ না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ভিত দুর্বল থেকে যায়। ফলে কিন্ডারগার্টেনের সাথে প্রতিযোগিতায় সরকারি স্কুলগুলো পিছিয়ে পড়ছে।
তিনি বলেন, অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। দক্ষতার উন্নয়নে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি, মিডডে মিল দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তারপরও শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেছে। এ অবস্থার উন্নয়নে শ্রেনিকক্ষে শিক্ষকদের আন্তরিকতা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
বুধবার (২৫ মে) খুলনার একটি অভিজাত হোটেলে ইউনেস্কো ও গণসাক্ষরতা অভিযান আয়োজিত এসডিজি-৪’র কৌশলগত কাঠামো ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা শীর্ষক বিভাগীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
সেমিনারে অংশ নিয়ে শিক্ষকরা বলেন, শ্রেণীকক্ষের বাইরে সারা বছরই বিভিন্ন জরীপ, প্রতিযোগিতায় শিক্ষকদের ব্যস্ত রাখা হয়। শিক্ষক সংকটে একজন শিক্ষককে সারাদিনে ৫-৬টি ক্লাশ নিতে হয়। ভালো বেতন ও সুযোগ সুবিধা না থাকায় অনেকের মধ্যে জব স্যাটিসফেকশন থাকে না। এছাড়া দীর্ঘক্ষণ শ্রেনি কার্যক্রম চালু রাখা, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের শাসনে বিধিনিষেধ থাকায় অনেকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মুকুল কুমার মৈত্র বলেন, প্রধান শিক্ষক আন্তরিক হলে ম্যানেজিং কমিটির সহায়তায় স্কুলে মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে পারেন। তবে অনেক স্থানেই স্কুলের আশেপাশের কমিউনিটি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের বলে মনে করেন না। ফলে সেখানে মনিটরিং এর অভাবে শিক্ষকরা নিয়মিত শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকেন না। ফলে শিক্ষার্থীদেরও সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটে না।
যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম বলেন, প্রশ্নপত্রে এমসিকিউ পদ্ধতি চালু করে পড়াশোনায় ঘাটতি তৈরি হয়েছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা না থাকায় সবক্ষেত্রেই অনিয়ম তৈরি হয়েছে। স্কুলের অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষকদের দক্ষতা উন্নয়ন ও জব স্যাটিসফেকশন তৈরি করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা কর্মকর্তা শ্যামল কৃষ্ণ ঘোষ, মোসলেম উদ্দিন, নাজমা শেখ, হিরামন কুমার বিশ্বাস, কে এম এনামুল হক, ড. জিয়া উস সবুর ও মমতাজ খাতুন।
এতে খুলনা বিভাগীয় শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তা, শিক্ষক ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। আশ্রয় ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
খুলনা গেজেট/ আ হ আ