এখন ধানের ভরা মৌসুম। নতুন ধান থেকে উৎপাদিত চাল বাজারে আসতে শুরু করেছে। তবুও ভারা এ মৌসুমে বেড়েছে চালের দাম। মানভেদে প্রতিকেজি চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৫ থেকে ৬ টাকা। চালের দাম বৃদ্ধির জন্য নগরীর ব্যবসায়ীরা একে অপরকে দুষছেন। তবে চালের দাম বৃদ্ধির জন্য মুজদকারীদের দায়ী করছেন অনেকেই।
নগরীর কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিকেজি মিনিকেট চাল ৬৬ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। একইভাবে ২৮ সেদ্ধ ৫০ টাকা, মোটা ৪২ টাকা, স্বর্ণা ৪৩ টাকা, নাজিরশাল ৭১ টাকা ও বাশমতি ৭৬ টকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। অথচ গত এক সপ্তাহ আগে একই চাল বিক্রি করেছেন প্রতিকেজি ৬২ টাকায়। অনুরুপভাবে ২৮ সেদ্ধ ৪২ টাকা, মোটা ৩৬ টাকা, স্বর্ণা ৩৯ টাকা, নাজিরশাল ৬৫ টাকা ও বাশমতি ৬৭ টাকায় বিক্রি করেছেন খুলনার ব্যবসায়ীরা।
রূপসা বাজারের চাল বিক্রেতা আল আমিন বলেন, একসপ্তাহ ধরে চালের বাজারে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। সামনে আবারও বাড়তে পারে। দাম বৃদ্ধির জন্য বেচাকেনা পড়ে গেছে। চালের দাম বৃদ্ধিতে অনেক ক্রেতার মধ্যে কম দামের চাল কেনার প্রবনতা বেড়ে গেছে। দাম বৃদ্ধির জন্য তিনি সরাসরি মিল মালিকদের দায়ী করেছেন।
একই বাজারের অপর ব্যবসায়ী মো: নান্টু শেখ বলেন, এখন বোরো ধানের ভরা মৌসুম। গত দু’বছর ধরে এ সময়ে চালের দাম বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, কৃষকদের কাছ থেকে দেশের উত্তর বঙ্গের মিল মালিকরা কম দামে ধান ক্রয় করে মজুদ রাখছে। বাজারে চালের সংকট দেখা দিলে মিল মালিকরা ধান ভঙ্গিয়ে অতিরিক্তমূল্যে চাল বিক্রি করবে।
নিউ মার্কেটের এক চাল ব্যবসায়ী বলেন, চালের সংকটের কথা জানিয়েছে বড় বাজারের পাইকারী ব্যবসায়ীরা। এবার বোরো ধানের আবাদ হয়েছে বেশ। নতুন চালও বাজারে আসতে শুরু করেছে। এ সময়ে চালের দাম বাড়তি হওয়ার কথা না। তবে কি কারণে দাম বেড়েছে তা তিনি জানেন না। চালের দাম বেড়েছে বলে পাইকারী ঘর থেকে তাকে জানানো হয়েছে।
একই বাজারে অপর ব্যবসায়ী জাকির আহমেদ বলেন, গেল বছরের অক্টেবর মাস থেকে ভারতের এলসি করা চাল নেই। তাছাড়া সুনামগঞ্জে চলছে বন্যা। ওই অঞ্চলের ধান থেকে উৎপাদিত চাল দেশের বেশিরভাগ চাহিদা মেটায়। বন্যার কারণে সেখাকার অনেকই ধান ঘরে তুলতে পারেনি। তাই চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
রূপসা বাজারে কথা হয় ক্রেতা শামসুর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষের দাম যেভাবে বেড়েছে তাতে বেঁচে থাকাটা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তেলের পর বেড়েছে পেঁয়াজের দাম এরপর বাড়ল চালের দাম। চার জনের সংসারে চাল কিনতে প্রতিবস্তায় মাসে তার ৩০০ টাকা বেশী খরচ হবে বলে জানান তিনি।
নিউ মার্কেটে কথা হয় গোলম কিবরিয়ার সাথে। তিনি পেশায় একজন বেসরকারি কর্মকর্তা। আয়ের সাথে ব্যয়ের কোন সংগতি খুঁজে পাচ্ছেন না। চালের দাম কমানোর জন্য তিনি মিল মালিকদের গোডাউনে অভিযান চালানোর পরামর্শ দিয়েছেন। যেন তারা সেখানে অতিরিক্ত ধান মজুদ করতে না পারে। এটা করলে চালের দাম নাগালের মধ্যে চলে আসবে বলে ধারণা করেন তিনি।
খুলনা গেজেট/ টি আই