বটিয়াঘাটায় দুই বোনকে হাত-পা বেঁধে গণধর্ষণ, নগরীতে কলেজ ছাত্রীকে পিবিআইএর কর্মকর্তা কর্তৃক ধর্ষণ, ডা: সুহাস কর্তৃক ডা: মন্দিরা হত্যা প্ররোচনার সাথে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। নারী ও শিশু ধর্ষণ-নির্যাতনের মতো জঘন্যতম সব কার্যকালাপের সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করতে হবে। ‘ধর্ষণ, নির্যাতন ও বাল্যবিবাহ মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ-আসুন নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলি’।
জনউদ্যোগ খুলনার অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার(১৭ মে) বেলা ১১টায় খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে ‘জনউদ্যোগ খুলনা’র উদ্যোগে বটিয়াঘাটায় দুই বোনকে হাত-পা বেঁধে গণধর্ষণ, নগরীতে কলেজ ছাত্রীকে পিবিআইএর কর্মকর্তা কর্তৃক ধর্ষণ, ডা: সুহাস কর্তৃক ডা: মন্দিরা হত্যা প্ররোচনার সাথে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয় ।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জনউদ্যোগ,খুলনা নারী সেলের আহবায়ক এ্যাড: শামীমা সুলতানা শীলু। সঞ্চালনা করেন নারীনেত্রী সুতপা বেদজ্ঞ।
বক্তারা বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতার হার দিন দিন বেড়ে চলেছে; বিশেষত ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা প্রতিদিন চোখে পড়ছে। পরিবারের সদস্য, নিকটাত্মীয় দ্বারা নির্যাতনের ঘটনাও অহরহ ঘটছে। দেখা যাচ্ছে নারী ঘরে বাইরে কোথাও নিারাপদে নেই। কখনও কখনও নারীর প্রতি সংঘটিত নির্যাতনের দায়ভার নারীকেই নিতে হচ্ছে- দোষারোপ করা হচ্ছে নারীকে। নারীর সুরক্ষায় দেশে যে আইন বিদ্যমান সেসব আইনের যথাযথ প্রয়োগ হচ্ছে না। যার ফলে নির্যাতনকারীরা নির্যাতন করতে আর ভয় পায় না। আর ধরা পরলেও আইনের ফাঁকফোকর গলে তারা পার পেয়ে যাচ্ছে।
তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা আমাদের রক্ষণশীল সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি। যা নারীর প্রতি নেতিবাচক এবং তাদের ওপর সহিংসতার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। এ সমস্যা উত্তরণের অন্যতম উপায় হতে পারে যদি নির্যাতিতা বান্ধব দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য আইনের প্রচলন করা যায়।
নীতি নির্ধারণের সর্বোচ্চ শক্তি কাজে লাগিয়ে কয়েকটা অপরাধীর শাস্তি বিধান ও কার্যকর হলে চিত্র অনেকটা পাল্টাবে। তাছাড়া সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারের যেসব সুবিধা রয়েছে বিশেষত ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার। নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিরোধে মন্ত্রণালয়ের হট লাইন সার্ভিস প্রভৃতি সে সম্পর্কে বড় পরিসরে জনগণের মাঝে জানানো প্রয়োজন।
একইসঙ্গে সমস্যা উত্তরণে দীর্ঘকালীন পরিকল্পনার ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে, পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলো প্রথম স্থান, যেখানে নারীকে সম্মান করতে শেখা সম্ভব। অন্যথায়, নারীর প্রতি সহিংসতার মাত্রা থামানো যাবে না। উপরন্তু এ ধরনের সমস্যা এক রূপ থেকে অন্য রূপে বদলাবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিপিবি মহানগর কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান বাবু, ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর সভাপতি মফিদুল ইসলাম, দেরোয়ার উদ্দিন দিলু, বৃহত্তর আমরা খুলনাবাসীর সাধারন সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান খোকন, খুলনা উন্নয়ন ফোরামের কো- চেয়ারম্যান ডা: মোসাদ্দেক হোসেন বাবলু, ছায়বৃক্ষের মাহাবুব আলম বাদশা, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ইসরাত আরা হীরা, গ্লোবাল,খুলনার শাহ মামুনর রহমান তুহিন, সম্মিলিত রাইটার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নূরুনাহার হীরা, কবি সৈয়দ আলী হাকিম, জাতীয় কবিতা পরিষদের সাধারন সম্পাদক মো: ইমদাদ আলী, শেখ আব্দুর হালিম ,আইনুল হক, উইথসীর ইমরান জাহান, লেখিকা সংঘের আনোয়ারা পারভীন, কারী শরীফ মিজানুর রহমান, ফাতেমা আকতার, দিলারা পারভীন, মুক্তা জামান, সনাকের রীনা পারভীন, পরিবর্তন খুলনার শিরিন পারভীন, রোকেয়া বানু, মহিলা সমিতির শাহীনুর আক্তার, সুজনের এ্যাড : মামুনর রশীদ, মহিলা পরিষদের সালমা জাহান মনি, দিলরুবা মরিয়ম সেতু, সাংবাদিক মহেন্দ্রনাথ সেন ও সাংবাদিক শিপলু প্রমুখ।