সয়াবিন তেলের লিটার ৩৮ টকা বাড়ানোর পরও সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি বাজারে। সরকার নির্ধারিত দরে খুচরা বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না ভোজ্য তেল। খোলা সয়াবিন বর্ধিত দামে বিক্রি হলেও বোতলজাত তেলের সংকট রয়েই গেছে। অন্যদিকে এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১০৪ টাকা কমিয়ে সরকার মূল্য সমন্বয় করলেও এখনো তা বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে খুলনায়।
নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ২১৫ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। যা গত বৃহস্পতিবার (৫ মে) সরকার ১৮০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। আর বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন ১৯৮ টাকা, ৫ লিটার বোতল ৯৮৫ টাকা ও পাম সুপার ১৭২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ঐ মূল্যে বাজারে আজ কোথাও সয়াবিন বা পাম সুপার পাওয়া যায়নি। অপরদিকে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বেসরকারি খাতে ১২ কেজির একটি সিলিন্ডারের দাম ১০৪ টাকা কমিয়ে ১,৩৩৫ টাকা নির্ধারণ করলেও সে দরে বিক্রি করছে না খুলনার অধিকাংশ ব্যবসায়ী।
রূপসা ট্রাফিক মোড়ের ব্যবসায়ী রুবেল বলেন, প্রতি লিটার ভোজ্য তেলে ৩৮ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। খোলা সয়াবিন তেলের দর নির্ধারণ করা হযেছে ১৮০ টাকা। কিন্তু সে তেল এখনও খুলনার বাজারে আসেনি। আগের দামে ক্রয় করা তেল তার দোকানে রয়েছে, যা তিনি বিক্রি করছেন। ২১০ টাকায় ক্রয় করা তেল বর্তমানে ২১৫ টাকায় বিক্রি করছেন। এ দরের নিচে বিক্রি করলে তার অনেক লস হবে।
অপরদিকে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন ১,৩৩৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও নগরীর অধিকাংশ ব্যবসায়ী আজ শুক্রবার ১২ কেজি ওজনের সিলিন্ডার ১,৩৫০ টাকার উপরে বিক্রি করছেন।
পিটিআই মোড়ের ব্যবসায়ী নুর আলম বলেন, একদিন আগেও ১,৩৮০ টাকা করে গ্যাস ক্রয় করেছেন। বৃহস্পতিবার জানতে পারেন প্রতি বোতলে ১০৪ টাকা করে কমানো হয়েছে। সরকার নির্ধারিত দরে বিক্রি করতে গেলে তার ব্যবসা থাকবে না।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পশ্চিম বানিয়াখামারের একজন ব্যবসায়ী জানান, শুক্রবার সকাল থেকেই সরকার নির্ধারিত দরে গ্যস বিক্রি করছেন। কিন্তু কোম্পানীর প্রতিনিধিরা তাকে গ্যাস দিচ্ছে না। সরকার দর নির্ধারণ করার পর থেকে তারা নানা অজুহাত দেখাচ্ছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গ্যাস কোম্পানীর প্রতিনিধিদের সাথে তার বাদানুবাদ হয়েছে।
নগরীর পশ্চিম বানিয়াখামারের বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার (৫ মে) বিকেলে গ্যাসের দাম নির্ধারণ করে সরকার। এ এলাকার অনেক ব্যবসায়ী শুক্রবার সরকারী নির্দেশ উপেক্ষা করেই পূর্বের দরে গ্যাস বিক্রি করছেন। তাছাড়া গতকাল ভোজ্য তেলের দামও পুন:নির্ধারণ করা হয়। কিন্ত খুচরা দোকানে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ২১৫ থেকে ২২০ টকায়। ব্যবসায়ীরা কেন সরকারের নির্দেশ মানছে না, তা তার বোধগম্য নয়। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের মতো মধ্যবিত্তের না খেয়ে মরা ছাড়া আর উপায় থাকবে না। বয়রার বাসিন্দা গৃহিনী আমেনা বেগম জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের দাম দফায় দফায় বাড়লেও গৃহকর্তার আয়তো বাড়ছে না। ফলে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে। তিনি এ বিষয়টি প্রশাসনকে একটু দেখার অনুরোধ জানান।
খুলনা গেজেট/ টি আই