নিউ মার্কেটে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনার জেরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঢাকা কলেজ প্রাঙ্গণে পা রাখতেই তোপের মুখে পড়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টচার্য্য। মঙ্গলবার দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের ক্যাম্পাসে আসেন তিনি। ভেতরে পুকুর ঘাটে গাড়ি থেকে নামার পরই তাকে ঘিরে ধরেন নেতাকর্মীরা। লেখকের সামনেই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়েন তারা।
এ সময় এক কর্মীকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনি তামশা দেখতে আসছেন।’ আরেকজন বলেন, ‘কেন আসছেন? সারাজীবন আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগরে বাঁচাইলাম। রাত থেকে ঝামেলা চলছে। আপনাদের কেউ আসলেন না।’
জটলার মধ্য থেকে কয়েকজনকে লেখকের দিকে তেড়ে যেতে দেখা যায়। গালি-গালাজও করেন অনেকে। তবে এ সবের প্রতিউত্তরে নীরব ছিলেন লেখক। বলেননি একটি শব্দও। এ সময় নিজের মোবাইল ফোন বের করে এর সঙ্গে, ওর সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় তাকে।
দীর্ঘদিন ঢাকা কলেজে ছাত্রলীগের কমিটি না হওয়ার জন্যও লেখকের প্রতি ক্ষোভ ঝাড়েন নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীরা দাবি করেন, কলেজের ছাত্রলীগের কমিটি থাকলে ব্যবসায়ীরা এতো সাহস পেত না।
এরপর লেখক বলেন, ‘কমিটি দিলেতো রাখতে পারো না। কমিটি থাকলে আজকে যে দুজন দায়িত্বে থাকতো, তাদেরতো বহিষ্কার করা লাগতো।’
এর আগে সোমবার রাত ১২টার দিকে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের এই সংঘর্ষের শুরু। উত্তেজনা চলে ভোর পর্যন্ত। এ ঘটনার জেরে নিউ মার্কেট খুলতে না দেয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা কলেজের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহবুব বলেন, ‘আমাদের তিন বন্ধু নিউ মার্কেটে খেতে গিয়েছিল। এ সময় দোকানে থাকা কর্মচারীরা তাদের মারধর শুরু করে। পরে আমরা গিয়ে তাদের প্রতিহত করি। এরপর থেকেই ঝামেলার শুরু।’
ওই সংঘর্ষের ঘটনায় মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত নিউ মার্কেট এলাকায় ছিল থমথমে পরিস্থিতি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা বেলা ১১ টায় মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। তার আগেই বেলা সাড়ে ১০টার দিকে কলেজের হলগুলোতে খবর যায়, ব্যবসায়ীরা কলেজের প্রধান ফটকে ঢিল ছুড়ছে।
এই খবর পেয়ে সবগুলো হল থেকে ছাত্ররা রাস্তায় নেমে আসেন। আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়। কলেজের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন ঢাকা কলেজের ছাত্ররা। আর ব্যবসায়ীরা অবস্থান নেন চন্দ্রিমা মার্কেটের সামনে।
দুপক্ষই একে অপরের দিকে ঢিল ছুড়তে শুরু করে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। কয়েক দফা ককটেল বিস্ফোরণ, পেট্রোল বোমা ছুড়তে গেছে বিক্ষুব্ধদের। দুপক্ষই দেশীয় অস্ত্রসহ অবস্থান নেয়।