দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্র নিউমার্কেট এলাকায় জলকামান নিয়ে নির্লিপ্ত অবস্থানে ছিল পুলিশ। বেলা ১২ টা ৫৬ থেকে জলকামান নিয়ে ঘটনাস্থলে আসতে দেখা যায়। এর প্রায় ৫০ মিনিট পর রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল ছুড়তে শুরু করেছে তারা। একই সঙ্গে তাদের সঙ্গে এগোচ্ছে জলাকামান।
এদিকে আগুন জ্বালিয়ে টিয়ার গ্যাস থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন সংঘর্ষকারীরা। এখনো ইটপাটকেল, স্ট্যাম্প ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি রাজধানীর নিউমার্কেট ও তার আশপাশের ব্যবসায়ী এবং ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এর আগেই সড়কের ডিভাইডারের ব্যারিকেট থেকে খুলে নেওয়া হয়েছে লোহা। তবে কে বা কারা খুলেছেন সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সংঘর্ষ সৃষ্টিকারীরা চড়াও হচ্ছেন গণমাধ্যমকর্মীদের ওপরও। ছাড় পায়নি অ্যাম্বুলেন্সও। ভেঙে দেওয়া হয়েছে জানালার গ্লাস। সব কিছু দেখে বেলা ১২টা ৫৬ মিনিটে ঘটনাস্থলে জলকামান নিয়ে আসতে দেখা যায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে। এর প্রায় পঞ্চাশ মিনিট পর মাঠে নামেন তারা।
গতকাল সোমবার দিনগত রাতে সংঘর্ষ আড়াই ঘণ্টায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় নিউমার্কেট এলাকা। সে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল ছোড়ে। যদিও গুলি করা হয়েছে বলে দাবি শিক্ষার্থীদের। পরে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরে গেলেও সেখানে বিক্ষোভ করেন।
এ সময় কিছু শিক্ষার্থী কলেজ ক্যাম্পাসের বিপরীতের তেল পাম্পে অবস্থান নেয়। এ সময় ব্যবসায়ীরাও গাউসিয়া, ইস্টার্ন মল্লিকার দিকে অবস্থান নেন। এরপর বেলা পৌনে ১১টার দিকে ফের রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এ সময় চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট এলাকার একটি ভবনে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। তবে ফায়ার সার্ভিসকে দেখা যায়নি। স্থানীয়ভাবেই সেটিকে নেভানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে। যদিও আগুন ছিল অল্পমাত্রার।
এদিকে সংঘর্ষের সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী। এর মধ্যে গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এসএ টিভির ওই জ্যেষ্ঠ ভিডিও জার্নালিস্ট লিপু। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। একই সঙ্গে আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
একাত্তর টিভির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক নাদিয়া শারমিন জানান, পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের ছাত্রদের হামলায় দীপ্ত টিভির সাংবাদিক আসিফ সুমিত , তাঁর ক্যামেরাপারসন, এসএ টিভির প্রতিবেদক তুহিন ও ভিডিও জার্নালিস্ট কবির হোসেন, মাইটিভির প্রতিবেদক ড্যানি, আরটিভির ভিডিও জার্নালিস্ট সুমন দে আহত হয়েছেন।
লিপু চিকিৎসা নেওয়ার আগে ওই সাংবাদিক জানান, নিউমার্কেট ব্যবসায়ীরা তার ওপর হামলা চালায়। হামলায় তিনি রক্তাক্ত হন এবং তার ক্যামেরা ভেঙে যায়। তিনি বলেন, ‘আমি নিউমার্কেটের এপাশ (নীলক্ষেত পাশ) থেকে যাই। এসময় ব্যবসায়ীদের কয়েকজন আমাকে বলে, ‘ছাত্ররা এদিক থেকে ঝড়ের মতো ইট মারছে, তুই ওই দিকে (ঢাকা কলেজ পাশ) যায়!’ তখন আমি তাদের বলি, ‘তা হলে আমাকে যেতে দাও।’ তারপর তাঁরা আমাকে লাথি-ঘুষি মারতে শুরু করে। তারপর লাঠি দিয়ে আঘাত করলে আমি রক্তাক্ত হই। তারা আমার ক্যামেরা ভেঙে ফেলেছে। ক্যামেরার ব্যাটারিও নিয়ে গেছে।’
অভিযোগ শুনে একাধিক ব্যবসায়ীকে বলতে শোনা যায়, ‘ভুয়া সাংবাদিক! আমাদের কেউ তাঁকে মারে নাই। সরকারের লোকেরাই মারছে!