পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন শাহবাজ শরিফ। সোমবার (১১ এপ্রিল) রাতে তাকে শপথবাক্য পাঠ করান সিনেট চেয়ারম্যান সাদিক সানজরানি। খবর জিও নিউজের।
পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানকে অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করার পর শাহবাজ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
সোমবার বিকেলে শাহবাজ পিটিআই-এর প্রার্থী শাহ মাহমুদ কুরেশির বিপক্ষে জাতীয় পরিষদে ১৭৪ ভোট পেয়েছেন। দল ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় কুরেশি কোনো ভোট পাননি।
ইমরান খানের পিটিআইকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর মিয়া মুহাম্মদ শাহবাজ শরীফের পিএমএল-এন এই মুহূর্তে পাকিস্তানের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল।
শাহবাজ শরিফ পাঞ্জাব প্রদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের মুখ্যমন্ত্রী। প্রায় চার দশক আগে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করার পর থেকে তিনবার এই পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
শাহবাজ শরিফ একজন সুপরিচিত ব্যবসায়ী মিয়া মুহাম্মদ শরিফের ছেলে এবং পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই।
শাহবাজ শরিফ লাহোরের সরকারি কলেজের স্নাতক সম্পন্ন করেন। ১৯৮৫ সালে লাহোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি নির্বাচিত হয়ে তিনি প্রথমবার আলোচনায় আসেন। কিন্তু ১৯৮৮ সালে রাজনীতিতে তার যাত্রা শুরু হয়।যখন তিনি পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলির সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য দায়িত্ব পালন করার পর পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়।
একই বছর শাহবাজ শরিফ জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে একটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়লাভ করেন এবং পাকিস্তানের সংসদের নিম্নকক্ষের সদস্য হন।
১৯৯৩ সালে তিনি আবার পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলিতে ফিরে আসেন এবং ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিরোধীদলের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তারপর ১৯৯৭ সালে শাহবাজ শরীফ তৃতীয়বারের মতো পাঞ্জাবের একটি আসনে জয়ী হন এবং পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হন।
পাঞ্জাব পাকিস্তানের রাজনৈতিকভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশ। সামরিক বাহিনী পিএমএল-এন সরকার উৎখাত করার পরে শাহবাজ শরিফকে কারারুদ্ধ করা হয়েছিল এবং পরে আট বছরের জন্য তাকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছিল।
২০০৮ সালে ফিরে এসে শরীফ আবার পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলির সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন এবং তারপর দ্বিতীয় মেয়াদে মুখ্যমন্ত্রী হন। এবার তিনি পুরো মেয়াদে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৩ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর শাহবাজ শরিফ পুনরায় তার নিজ প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
২০১৮ সালের নির্বাচনে শাহবাজ শরিফ জাতীয় পরিষদে তার আসন ধরে রাখার সিদ্ধান্ত নেন এবং বিরোধী দলের নেতা হিসেবে মনোনীত হন। ২০১৯ সালে শাহবাজ শরীফ পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের কাছে তার মোট প্রায় ১০ কোটি রুপির সম্পদ আছে বলে জানিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, সোমবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বসে। ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ১৭২ জন সদস্যের সমর্থন লাগে, সেখানে প্রতিনিধি পরিষদে ১৭৪ ভোট পেয়ে শাহবাজ শরিফ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।