খুলনা, বাংলাদেশ | ২৫ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১০ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  রিসেট বাটন বলতে ৭১ এর গর্বিত ইতিহাস নয় দূর্নীতিগ্রস্থ রাজনীতি মুছে নতুন সূচনার কথা বলেছেন ড. ইউনূস : প্রেস উইং
  পিরোজপুরে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে শিশুসহ ৮ জন নিহত

পাইকগাছার আলোচিত অগ্নিসংযোগ ও ঘের দখল মামলায় ৪ আসামি কারাগারে

পাইকগাছা প্রতিনিধি

পাইকগাছার কপিলমুনি-গদাইপুর সীমান্তের নোয়ালতলা-চক শুননাল মৌজার আলোচিত ৭০০ বিঘার চিংড়ি ঘেরের দখল প্রচেষ্টা ও অগ্নিসংযোগ মামলায় থানা পুলিশ ২ আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার শ্যামনগর গ্রামের মৃত মোজাহার শিকদারের ছেলে মো: আনসার শিকদার(৫০) ও গদাইপুরের মৃত মৃত ইউসিুফ সরদারের ছেলে মো: আব্দুল আজিজ সরদার(৫২)। মামলায় একই দিন আদালত শ্যামনগরের মৃত গোলাপ সরদারের ছেলে দু’ সহোদর মো: বাবুল সরদার(৪৮) ও মো: গফুর সরদার(৫৫) এর জামিন না মঞ্জুর করে জেল-হাজতে পাঠিয়েছে। এদিন তারা আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন।

এছাড়া ঘটনার দিন আটক মহিলা রুলিয়া খাতুন(৪৫) এদিন আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আদালত চত্ত্বরেই এক স্বাক্ষীকে জুতাপেটা করায় আদালত তাকে দিনভর আদালত চত্ত্বরে দাড়িয়ে থাকার নির্দেশ দেন বলে জানানো হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৭এপ্রিল) সকাল আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে গফুর সরদার, ফসিয়ার শেখ ও বক্কার সানার নের্তৃত্বে বাবুল সরদার কাদের মল্লিকসহ ৩০/৩৫ জনের একটি গ্রুপ সংঘবদ্ধ হয়ে লাঠি-সোটা ও দা-কুড়ালসহ ফের দখল প্রচেষ্টা চালায়। এসময় বাঁধা দিতে গেলে তপু ও শেখ হারুন অর রশিদ নামে দু’ঘের কর্মচারী আহত হন। পরিস্থিতি সামাল দিতে আত্মরক্ষায় ঘের মালিক ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করেন। এসময় তারা ঘের দখলে ব্যর্থ হয়ে ঘেরের বাসায় অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে এদিন দেশীয় অস্ত্রসহ রুলিয়া খাতুন (৪৫) নামে এক মহিলাকে আটক করেন। এঘটনায় ঘের মালিক শেখ আনারুল ইসলাম বাদী হয়ে শ্যামনগরের বাবুল সরদারকে প্রধান করে ১৮ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা আরো ৩০/৪০ জনকে আসামী দেখিয়ে থানায় একটি মামলা করেন। যার নং-১২, তাং-০৭/০৪/২২ইং।

প্রসঙ্গত, উপজেলার গদাইপুর ও কপিলমুনি সীমান্তের নোয়ালতলা ও চক শুননাল মৌজাস্থ ৭০০ বিঘার চিংড়ি ঘেরটি নিয়ে কতিপয় জমাদ্দার ও যৌথ মালিক পক্ষের সাথে বেশ কিছুদিন ধরে বিবাদ চলে আসছে। এর আগে ঘেরটিতে লবণ পানির উত্তোলন নিয়ে কতিপয় জমাদ্দারদের সাথে মালিক পক্ষের মতদ্বন্দ্ব হয়। এর প্রেক্ষিতে সুবিধা বঞ্চিত একটি মহলের ইন্ধনে কতিপয় জমাদ্দাররা বহিরাগতদের সমন্বয়ে বিভিন্ন সময় ঘেরটিতে হানা দিয়ে দখল অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে।

ঘের মালিক শেখ আনারুল ইসলাম জানান, চলতি বছর মৌসুমের শুরুতেই পানি ওঠা নিয়ে অনিশ্চয়তা ও পরে উপজেলা প্রশাসন ও চিংড়ি চাষীদের যৌথ সিদ্ধান্তে ওয়াপদার পাশে বিকল্প বাঁধ নির্মাণের শর্তে পরিকল্পিত উপায়ে পানি উত্তোলনপূর্বক চিংড়ি আবাদ শুরু করেন।

এরও আগে ঘের অভ্যন্তরের কতিপয় জমাদ্দার শ্যামনগরের গফুর সরদার, বাবুল সরদার ও ফসিয়ার শেখদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সময় বেশ কয়েকবার বসাবসি করেও কোন সমাধানে আসেনি। এক পর্যায়ে গত ২৫ মার্চ কতিপয় জমাদ্দার গফুর-বাবুল গংরা ঘেরটি দখলে নিতে ব্যর্থ হয়ে বাসায় অগ্নিসংযোগ করে বলে ঘের মালিক শেখ আনারুল ইসলাম থানায় একটি মামলা করেন। যার নং-২০। ঐ মামলায় পুলিশ গফুর সরদার ও ফসিয়ার শেখকে গ্রেপ্তার করেন। পরে জামিনে ছাড়া পেয়েই সর্বশেষ ফের দখলে ব্যর্থ হয়ে কর্মচারীদের মারপিট ও বাসায় অগ্নিসংযোগ করে।

এসময় তিনি আরো বলেন যে, দেরীতে পানি উত্তোলন, জমাদ্দারদের হারির টাকা পরিশোধ, বিকল্প বাঁধ নির্মাণ, পোনা অবমুক্ত, পরিচর্যা ও ঘের কর্মচারীদের বেতন দিয়ে তারা যখন হাফিয়ে উঠেছেন। ঠিক সেই মূহুর্তে শুরু হয়েছে চিংড়িতে মড়ক। এর উপর কতিপয় স্বার্থান্বেষীদের মূহুর্মূহু হামলায় রীতিমত বিষিয়ে উঠেছেন তারা। তারা এর স্থায়ী সমাধান চান বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে পাইকগাছা থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি) জিয়াউর রহমান জানান, মামলায় রবিবার দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারেও পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/কেএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!