সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নে রেশন কার্ডের ৩০ কেজি (১০ টাকা কেজি) চাউল তুলতে গ্রাহকদেরকে ৩০০ টাকার পরিবর্তে এখন ৪০০ টাকা দিতে হচ্ছে। অতিরিক্ত ১০০ টাকা দিতে হওয়ায় বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন উপকারভোগীরা।
এই অতিরিক্ত ১০০ টাকা গ্রহণের বিষয়ে ডিলাররা বলছেন ইউনিয়ন পরিষদের নির্দেশনায় নির্ধারিত ৩০০ টাকার সাথে ১০০ টাকা হারে চৌকিদারি ট্যাক্স আদায় করা হচ্ছে।
এদিকে ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে একই কথা। তারা জানিয়েছে একসাথে ৪ হাজার মানুষকে চাউল দেয়া হচ্ছে। সেই সাথে ট্যাক্সেও টাকাটা ও আদায় করা হচ্ছে। পরবর্তীতে রেশন কার্ডের সাথে ট্যাক্সের রিসিট দিয়ে দেয়া হবে। কিন্ত আগে থেকে ঘোষণা না দেয়ায় হতদরিদ্র গরীব মানুষের মধ্যে বিড়াম্বনার সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের হরিনগর এলাকায় চাউলের ডিলার সিরাজুল ইসলাম ও আনান্দ কর্মকার প্রতিটি গ্রাহকের কাছ থেকে ৪শ টাকা নিয়ে ৩০ কেজি করে চাউল দিচ্ছেন। অনেকেই জানেনা ৪ শ টাকা দিয়ে ৩০ কেজি চাউল নিতে হবে। তাই অনেকে চাল না নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন বাড়ি। এক শত টাকা বেশি নিচ্ছে এর কোন রিসিট সাথে সাথে দেওয়াও হচ্ছে না।
মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের মথুরাপুর গ্রামের তাসলিমা খাতুন চাউল নিতে এসে জানান, বাড়ি থেকে চাল নেওয়ার জন্য ৩শ টাকা নিয়ে আসলাম কিন্তু এসে দেখি ৪শ টাকা না দিলে চাল দিচ্ছে না। চকিদারি ট্যাস্ক ১শ টাকা করে দিয়ে তার পর চাল নিতে হবে। আমার বাড়ি থেকে চকিদার যেয়ে ট্যাক্স নিয়ে এসেছে।
সুন্দরবন থেকে আসা আমেনা খাতুন (৪৫) বলেন, আমি খুব গরীব মানুষ। ৩শ’ টাকা নিয়ে চাল নিতে এসে দেখি ৪শ টাকা না দিলে চাল দিবে না। এর আগে আমরা ৩শ টাকা দিয়ে চাল নিতাম।
একই এলাকার নুরইসলাম বলেন, দেশে যে কি হচ্ছে ৩শ টাকার চাল ৪শ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। এর আগে চকিদারি ট্যাক্স দিতে হয়নি হঠাৎ আজ চকিদারি ট্যাক্স দিয়ে চাউল নিতে হচ্ছে।
শরিফুল ও সুশিল মন্ডল বলেন, ৩শ টাকা নিয়ে চাল নিতে এসে ৪শ টাকা না দিলে চাল দেওয়া হবে না। তাই বাজার থেকে টাকা ধার করে নিয়ে চাল নিতে হয়েছে।
ডিলার আনন্দ কর্মকার বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের নির্দেশে একশ টাকা চকিদারি ট্যাক্স ও চালের দাম ৩শটাকা নিয়ে চাল দিচ্ছি। আলাদা করে কোন রিসিট দেওয়া হচ্ছে না পরে কার্ডের সাথে রিসিট দেওয়া হবে।
মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অসীম মৃধা বলেন, তার ইউনিয়নে এক সাথে ৪ হাজার মানুষের চাল দেওয়া হচ্ছে। সেই সাথে ট্যাক্সের টাকা নিয়ে নিচ্ছে। কার্ডের সাথে পরে রিসিট দেওয়া হবে।
দায়িত্ব থাকা ট্যাগ অফিসার মিনা হাবিবুর রহমান জানান, হত দরিদ্রদের চাউল দেওয়ার সাথে ট্যাক্স নেওয়ার কোন সম্পর্ক নেই। ৩০ কেজি চাউল ৩শ টাকায় নিবে। এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আক্তার হোসেন বলেন, এবিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই