সূর্যের নানা ধরনের ক্রিয়াকলাপের কারণে বুধবার (৬ এপ্রিল) ও বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) পৃথিবীতে একটি সৌরঝড় আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের। এই ঝড় নিয়ে গত কয়েক দশক ধরে বেশ চিন্তিত গবেষকরা। তাদের মতে, সৌরঝড় হলো একটি ধ্বংসলীলা।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এনওএএ) অধীনে মহাকাশ আবহাওয়ার পূর্বাভাস কেন্দ্রের বরাতে বুধবার (৬ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এনওএএ টুইটারে জানিয়েছে, সূর্যের কেন্দ্রীভূত ফিলামেন্ট বিস্ফোরণ থেকে করোনাল ভর নির্গমনের ফলে ভূচৌম্বকীয় ঝড়ের জন্য একটি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ফলে পৃথিবীতে একটি সৌর বিকিরণ ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মহাকাশ আবহাওয়ার পূর্বাভাস কেন্দ্র জানিয়েছে এবারের সৌরঝড়টি খুব বেশি মাত্রার নয়। তারা এবারের ঝড়টিকে জি-১ মাত্রা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সর্বোচ্চ মাত্রা হচ্ছে জি-৫।
গবেষকরা জানান, এই সৌরঝড় ৭ এপ্রিল পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে। সৌরঝড়ের কারণে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছ দিয়ে ঘুরে চলা কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইটসহ সব বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং রেডিও কার্যকালাপ সাময়িকভাবে বাধার সন্মুখিন হতে পারে।
গবেষকরা তাদের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ‘এই সৌরঝড়ের একটি ভগ্নাংশ পৃথিবীর দিকে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে এবং এটি আমাদের গ্রহের চৌম্বক ক্ষেত্রে আঘাত হানতে পারে। এর ফলে বুধবার (৬ এপ্রিল) ও বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) এই আঘাত নেমে আসতে পারে পৃথিবীর ওপর। সূর্যের একটি ঝলকের আঘাত একটি ছোট জি-১ শ্রেণির ভূচৌম্বকীয় ঝড়ের জন্ম দিতে পারে।’
ভূচৌম্বকীয় ঝড় হলো পৃথিবীর চৌম্বকমণ্ডলের একটি প্রধান ব্যাঘাত, যা পৃথিবীর চারপাশের মহাকাশ পরিবেশে সৌরবায়ু থেকে শক্তির খুব দক্ষ আদান-প্রদানের সময় ঘটে। মাঝেমধ্যেই এই সৌরঝড় পৃথিবী অভিমুখে ধেয়ে এসে নানা বিপত্তি ঘটায়। এর ফলে তৈরি হয় রেডিও ব্ল্যাকআউট। ইন্টারনেট ব্যবস্থায় এর প্রভাব পড়ে।
অগ্ন্যুৎপাতের সর্বশেষ উৎস হলো আগুনের গিরিখাত। এই আগুনের গিরিখাত নামে পরিচিত একটি অবস্থান, যা স্পেস ওয়েদার অনুসারে চুম্বকত্বের একটি অন্ধকার ফিলামেন্ট। সূর্যের বায়ুমণ্ডলে তা উন্মুক্ত হয়েছে। গিরিখাতের দেওয়াল কমপক্ষে ২০ হাজার কিমি উঁচু এবং ১০ গুণ লম্বা।
বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে চৌম্বকীয় ফিলামেন্টের টুকরোগুলো বিস্ফোরণের স্থান থেকে পৃথিবীতে আসতে পারে।