খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

চিতলমারীতে শিক্ষক পরিবারকে একঘরে

চিতলমারী প্রতিনিধি

বাগেরহাটের চিতলমারীতে এক শিক্ষক পরিবারকে একঘরে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ঘোষণার পর থেকে ওই পরিবারের সদস্যরা সামাজিক ও মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বিপর্যস্ত পরিবারটি এখন বসতভিটা বিক্রি করে ওই এলাকা ছেড়ে অন্য গ্রামের যাওয়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। এ ঘটনায় গোটা এলাকায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রীয়া ছড়িয়ে পড়ছে।

বুধবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার পাঙ্গাশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আল্পনা হালদার (৫৫) বলেন, ‘গত ১৮ মার্চ পাঙ্গাশিয়া গ্রামের মৃত কালিদাস মন্ডলের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে আমার স্বামী সভা রঞ্জন গুহ অংশ গ্রহন করে অতিথি আপ্যায়নে সহযোগিতা করেন।

এ ঘটনার জের ধরে বৃহৎ সমাজ ডেকে মুক্তবাংলা চারিপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক মৃনাল কান্তি গুহ আমাদের পরিবারকে একঘরে ঘোষণা দিয়েছেন। সেই সাথে তাঁরা সমাজ থেকে আমাদের বাদ দিয়ে ৩০ মার্চ বাড়ির পাশে অন্নদা গুহর বাড়িতে বিশাল অনুষ্ঠান করেন।’

শিক্ষক আল্পনা হালদারের স্বামী সভা রঞ্জন গুহ (৬০) বলেন, ‘একজন মৃত মানুষের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য আমাদের পরিবারকে সমাজ থেকে একঘরে করা হয়েছে। ঘোষণার পর থেকে আমরা সামাজিক ও মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। বসতভিটা বিক্রি করে এই এলাকা ছেড়ে আমরা অন্য গ্রামে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছি।

এ ব্যাপারে মুক্তবাংলা চারিপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক মৃনাল কান্তি গুহ বলেন, ‘সভা রঞ্জন গুহর বিষয়টি সামাজিক সিদ্ধান্ত। সমাজ প্রধান হিসেবে আমি বিষয়টি ঘোষণা দিয়েছি মাত্র। সভায় সভা রঞ্জন গুহও উপস্থিত ছিলেন।’

মুক্তবাংলা চারিপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও মৃত কালিদাস মন্ডলের ভাই রুহিদাস মন্ডল বলেন, ‘সমাজে যাঁরা সমাজ প্রধান তাঁরা তাঁদের অস্তিত্ত্ব টিকিয়ে রাখতে পুঁথি-পুস্তকের বাইরে সমাজে কিছু নিয়ম জারি করেছে। সমাজের নিরীহ মানুষদের উপর তাঁরা ওই নিয়ম চাপিয়ে দেন। যাঁরা ওই নিয়ম মানতে চায় না, সমাজপতিরা তাঁদের একঘরে ঘোষণা করেন। শুধু সভা রঞ্জন একা নয়, আগেও বহু পরিবারকে একঘরে ঘোষণা করেছে ওই সমাজপতিরা।’

পাঙ্গাশিয়া গ্রামের প্রবীণ ব্যাক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড মৃম্ময় মন্ডল বলেন, ‘সমাজ সেই পুরানো ধারণা আকড়ে থাকবে সেটা ঠিকনা। আমরা বিজ্ঞানের যুগে পুরানো জায়গায় ফিরে যেতে চাই না। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’

হিজলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আবু সাহিন বলেন,‘বিষয়টি আমিও শুনেছি। ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ রয়েছে।’

তবে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইয়েদা ফয়জুন্নেছা বলেন, ‘এ ধরণের কোন অভিযোগ আমরা পাইনি। তারপরও বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখব।

 

খুলনা  গেজেট/এএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!