দুই বছর আগে হঠাৎ স্টক করে মারা যায় স্বামী বারিক শেখ। সংসারের হাল ধরে ৩৭ বছর বয়সী বড় ছেলে ইউসুফ শেখ। ভাগ্য এত খারাপ কিছুদিন পর বড় ছেলেও দুর্ঘটনায় মারা যায় তার স্ত্রী এবং এক ছেলে রেখে। সংসারের আয় রোজগারের আর কেউ থাকে না। সংসারের উপার্জনক্ষম স্বামী এবং বড় ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন ৬০ বছর বয়সী মাজেদা বেগম। স্বামী এবং বড় ছেলে জীবিত থাকা অবস্থাতায়ও মাজেদা বেগমের ঠিকানা ছিলো পরের বাড়ির ভাড়াটিয়া হিসেবে। পরের বাড়িতে কাজ করে তার সংসার চলতো। মাজেদা বেগম কখনও কল্পনা করতে পারেনি মৃত্যুর পূর্বে সে মাথা গোঁজার স্থায়ী ঠিকানা পাবে।মুজিব বর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রেষ্ঠ উপহার বিনামূল্যে জমি এবং ঘর পেয়ে মাজেদা বেগম ভীষণ খুশী।
সত্যিই রুপকথার গল্পের মতো মাজেদা বেগমের স্বপ্ন আজ বাস্তবে রুপ নিয়েছে। মাজেদা বেগমের এখন স্থায়ী ঠিকানা খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার দিঘলিয়া সরদার ঘাট ভৈরব নদীর তীরবর্তী নয়নাভিরাম ভৈরব নগর-২ আশ্রয়ন কেন্দ্রে। দিঘলিয়া মৌজার সরদার ঘাটে ৬০ শতাংশ সরকারি খাস জমির উপর গড়ে উঠেছে এ আশ্রয়ন কেন্দ্র । মাজেদা বেগমের মতো ভূমিহীন গৃহহীন ১০ টি পরিবারের স্থায়ী মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে এ আশ্রয়ণ কেন্দ্রে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল, অসহায়, দরিদ্র জনগোষ্ঠির পুনর্বাসন। ঋণ প্রদান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা। আয়বর্ধক কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র দূরীকরণের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যকে সামনে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্প -২ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
আজ সোমবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুল আলম আনুষ্ঠানিকভাবে সরদার ঘাট ভৈরব নগর-২ আশ্রয়ণ কেন্দ্রে মাজেদা বেগমের মতো ১০ জন সুবিধাভোগীদের হাতে জমির দলিল তুলে দেন। দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে এ প্রতিবেদকের কাছে জমির দলিল পাওয়ার পর অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে মাজেদা বেগম বলেন, “পরের বারান্দায়, পরের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে কাটাইছি দীর্ঘদিন। জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে জমি এবং ঘরের মালিক হতি পারবো কহোনও কল্পনা করিনি। প্রধানমন্ত্রী হাসিনা আমাদের বিনামূল্যে জমি এবং ঘর বানাই দিছে। আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিছে। ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করি যাতে সে আজীবন ক্ষমতায় থাকতি পারে। তার বাপের জন্যি দোয়া করি।
তিনি আরও বলেন, ইউএনও সাহেব আমার দূরাবস্থার কথা শুনে একদিন রাতের বেলা আমি দেয়াড়া কোহিনুর প্রাইমারী স্কুলের পাশে যে বাড়িতে থাকতাম সে বাড়িতে যায়ে আমার নাম ঠিকানা লিখে আনে বিনামূল্য জমি এবং ঘরের ব্যবস্থা করে দিছে এ কারণে তার জন্যিও দোয়া করি”।
খুলনা গেজেট/ টি আই