ওয়ানডে ক্রিকেটে দুর্দান্ত ফর্মে বাংলাদেশ। টিম টাইগার্সের প্রিয় এ ফরম্যাটে সাফল্যের পালকে সবশেষ সংযোজন দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়। আগামী বছর তথা ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের আসর বসছে ভারতে। এরই মধ্যে ওয়ানডে সুপার লিগে ১২০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা তামিম বাহিনীর বিশ্বকাপের টিকিট বলতে গেলে একপ্রকার নিশ্চিত। বিশ্ব আসরে লাল-সবুজ বাহিনীর ভালো করা নিয়ে আশাবাদী সাবেক অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাও।
রোববার (২৭ মার্চ) মিরপুরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথা জানালেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। সাবেক সফল এ অধিনায়ক মনে করেন, ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলতে পারবে বাংলাদেশ। তবে এর বেশি প্রেডিকশন করতে চান না আপাতত। কারণ, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল জিততে শুধু ভালো খেললেই হয় না, ভাগ্যেরও সহায়তা লাগে। তবে শেষ চারে খেলা নিয়ে আশাবাদী ম্যাশ।
তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, আমরা সেমিফাইনাল পর্যন্ত খেলব। যেহেতু ভারতে খেলা হবে। ২০১৯-এর বিশ্বকাপের পর আমি বলেছিলাম, বিশ্বকাপ জেতার মতো এই দলটার সম্ভাব্য সবকিছুই আছে। তবে এ জন্য অবশ্যই খেলোয়াড়দের ফিট থাকতে হবে। এখনো কিন্তু দেড় বছর বাকি। তার আগে অনেক ম্যাচ আছে, সিরিজ আছে। সেগুলোও ভালোভাবে শেষ করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের বিশ্বকাপের আগে ফর্মে থাকা ও সুস্থ থাকাটাও সমান জরুরি।’
ওয়ানডেতে ভালো ছন্দে বাংলাদেশ। তবে দলে এখনো আরও উন্নতির সুযোগ আছে বলে মনে করেন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’। তিনি বলেন, ‘উন্নতির তো আসলে শেষ নেই। একটা দল যখন ভালো খেলা শুরু করে, তখন কিছু দুর্বল জায়গাও থাকে। বড় টুর্নামেন্টে যত কম ভুল করবে তত ভালো। এই ওয়ানডে দল ২০১৫ সাল থেকেই ভালো খেলছে। একটা ছন্দ চলে এসেছে। এই ছন্দ মস্তিস্কেও কাজ করে, যখন দল ওয়ানডে খেলতে নামে। এটা খুব ভালো সুযোগ।’
বিশ্বকাপে ভালো করার ক্ষেত্রে চার সিনিয়রের পাশাপাশি মাশরাফীকে আশাবাদী করছে লিটন দাস, তাসকিন এবং আফিফরাও। ম্যাশ বলেন, ‘আমাদের জন্য এটাই আশাবাদী হওয়ার মতো ফরম্যাট। দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই ফরম্যাটে ভালো খেলছি আর চারজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে, যারা প্রায় ১৩-১৪-১৫ বছর ধরে খেলছে। চারজনের অভিজ্ঞতা মেলালে প্রায় ৬০ বছর। লিটন, তাসকিনদেরও ৭-৮ বছর হয়ে গেছে, মানে এখন ওদের পারফর্ম করার সময় এবং করছেও।’
ওয়ানডে সুপার লিগে সবার আগে ১০০ পয়েন্ট নিয়ে আগেই শীর্ষস্থান দখলে নিয়েছিল বাংলাদেশ। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের ফলে তামিমদের পয়েন্ট বেড়ে এখন ১২০, যা টাইগারদের ভারতের মাটিতে আগামী ওয়ানডে বিশ্বকাপের টিকিট আগাম নিশ্চিত করে দিয়েছে।
সুপার লিগের নিয়মানুযায়ী, ২০২৩ বিশ্বকাপে স্বাগতিক ভারত তো সুযোগ পাবেই, তার সঙ্গে সেরা সাত দল (মোট ৮টি) সরাসরি যাবে বিশ্বকাপে। ১৩ দলের বাকি পাঁচ দল আনুষ্ঠানিক বাছাইপর্ব খেলবে নিচের স্তরের বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসা আরও পাঁচ দলের সঙ্গে, ১০ দলের সেই বাছাইপর্ব থেকে ২ দল সুযোগ পাবে বিশ্বকাপে।
১৩ দলের সুপার লিগে প্রতিটি দল ২৪টি করে ম্যাচ খেলবে। বাংলাদেশ খেলে ফেলেছে ১৮টি ম্যাচ, এখন পর্যন্ত শীর্ষেই আছে টাইগাররা। তাতে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেছে বিশ্বকাপের টিকিট। বাকি ছয় ম্যাচ হারলেও সেরা আটের মধ্যে অন্তত থাকতে পারবে বাংলাদেশ। সে ক্ষেত্রে বিশ্বকাপে সরাসরি অংশগ্রহণও বলতে গেলে নিশ্চিত। বাকি রইল শুধু আনুষ্ঠানিকতা আর কিছু হিসাব-নিকাশ।
খুলনা গেজেট/কেএ