খুলনা, বাংলাদেশ | ২৫ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১০ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  পিরোজপুরে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে শিশুসহ ৮ জন নিহত

পাইকগাছার কুচিয়া নদীর উপর নির্মিত সেতুটি এখন মরণ ফাঁদ!

শেখ নাদীর শাহ্, পাইকগাছা

খুলনার পাইকগাছা উপজেলার সোলাদানার কুচিয়া নদীর ওপর নির্মিত সেতুটির মূল কাঠামো থেকে খসে পড়ছে পলেস্তরা (প্লাষ্টার)। অতিরিক্ত লবণাক্ততাসহ নানা সংকটে সেতুটির অবস্থা এখন জীর্ণ-শীর্ণ। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এক প্রকার বাধ্য হয়েই সেতুটি দিয়ে চলাচল করছেন জনপদের অন্তত চারটি গ্রামের হাজারো মানুষ। যেকোন সময় সেতুটি ভেঙ্গে বড় ধরনের প্রাণঘাতি দুর্ঘটনার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

এমন অবস্থায় সেতুটি পরিত্যক্ত ঘোষণার পাশাপাশি নতুন সেতু নির্মাণে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে প্রতিবেদনকালে জানা যায়, উপজেলার সোলাদানা ইউনিয়নের কুচিয়া নদীর দু’ তীরের টেংরামারী, উত্তর কাইনমুখী, দক্ষিণ কাইনমুখী ও দিঘাসহ প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দাদের চলাচলের সুবিধার্থে প্রায় ৩৫ বছর আগে সেতুটি নির্মাণ করেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মাজেদ সানা। তবে দীর্ঘ দিনেও সংষ্কার না করায় অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে এরই মধ্যে ফাঁটল ধরেছে সেতুর খুঁটি গুলোতে। রেলিং (গার্ডার) ভেঙ্গে পড়েছে তারও আগে। দৃশ্যত সেতুটির এখন কঙ্কালসার অবস্থা। তার উপর বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিন সেখানকার কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষ যানবাহনসহ চলাচল করছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।

দ্বীপ বেষ্ঠিত সোলাদানার উত্তর কাইনমুখী গ্রামের কিশোর মন্ডল বলেন, ইউনিয়নব্যাপী জালের মত ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় নদী বা খাল। চারদিকে যতদূর চোখ যায় যেন পানি আর পানি। সুষ্ঠু যাতায়াত ব্যবস্থায় সেতুটিই তাদের একমাত্র ভরসা। তবে মূল অবকাঠামো হারিয়ে সেতুটি এখন রীতিমত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে এখনো এলাকাবাসীর অবিরাম সেবা দিয়ে যাচ্ছে। যেকোন সময় সেখানে প্রাণঘাতি দুর্ঘটনারও আশংকা করেন তিনি।

দিঘার কল্লোল মন্ডল জানান, সেতুটির এ করুণ পরিণতি আরও ১০ বছর আগের। সেই থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাধ্য হয়েই যাতায়াত করছেন তারা। উপজেলা সদরসহ স্কুল-কলেজে পৌছাতে সেতুটিই তাদের একমাত্র ভরসা।

দক্ষিণ কাইনমুখীর বিজন মন্ডল জানান, সেতুটি দিয়ে পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অতিরিক্ত খরচ করে মালামাল বাড়িতে নিতে হয় তাদের।

টেংরামারীর প্রশান্ত মন্ডলের আশংকা, যেকোনো সময় সেতুটি নদীর মধ্যে ধসে ঘটে যেতে পারে কোন বড় ধরনের প্রাণঘাতি দূর্ঘটনা। সেতুটি এখন রীতিমত মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সম্পূর্ণ সেতুর পিলার বা খুঁটিগুলোসহ সমুদয় পলেস্তরা ধ্বসে পড়ছে।

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এস এম এনামুল হক বলেন, ‘তিনি চেয়ারম্যান থাকাকালীন নতুন সেতুর প্রস্তাবনাসহ কাগজ-পত্র তৈরি করে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে পাঠিয়েছিলেন, সেটি এখনো পাশ হয়নি’।

স্থানীয় বর্তমান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান গাজী বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন স্থানীয় ৪টি গ্রামসহ উপজেলার হাজারো মানুষ যাতায়াত করে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি পরিত্যক্ত ঘোষণার পাশাপাশি নতুন করে আরো একটি সেতু নির্মাণের দাবি তার। এ নিয়ে আগামী উপজেলা মাসিক উন্নয়ন সভায় উত্থাপনের কথাও জানান তিনি।

পাইকগাছা উপজেলা প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান এস এম এনামুল হক উপজেলা সমন্বয় সভায় একাধিকবার সেতুটির বিষয় উত্থাপন করলেও সেসময় পর্যাপ্ত অর্থাভাবে সেতুটির বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। বর্তমানে সেতুটির অবস্থা বিবেচনায় অগ্রাধিকারভিত্তিতে সেতুটি খুব শীঘ্রই বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন তিনি।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!