দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর আফগানিস্তানে খুলেছিল মেয়েদের মাধ্যমিক স্কুল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় ক্লাসে ফিরেছিল মেয়ে শিক্ষার্থীরাও। কিন্তু বুধবার (২৩ মার্চ) স্কুল খোলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফের তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবানের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে ফের বন্ধ ঘোষণা করায় কট্টরপন্থী এই গোষ্ঠীর নীতি পরিবর্তনের বিষয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে বলেও জানিয়েছে বার্তাসংস্থাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার স্কুলে আসার পর মেয়ে শিক্ষার্থীদের বাড়ি ফিরে যেতে বলার খবরের বিষয়টি নিশ্চিত করে তালেবানের মুখপাত্র ইনামুল্লাহ সামানগনি এএফপি’কে বলেছেন, ‘হ্যা, এটি সত্য।’
এএফপি বলছে, তাদের (এএফপির) একটি টিম বুধবার রাজধানী কাবুলের জারঘোনা হাইস্কুলে শিক্ষার্থীদের ছবি তুলছিলেন। এসময় এক শিক্ষক সেখানে প্রবেশ করেন এবং সবাইকে বাড়ি ফিরে যেতে নির্দেশ দেন।
গত বছরের আগস্টে তালেবান গোষ্ঠী ক্ষমতা দখলের পর বুধবারই প্রথমবারের মতো ক্লাসে ফিরে আসা শিক্ষার্থীরা নির্দেশনা পেয়ে অশ্রুসিক্তভাবে তাদের জিনিসপত্র গুছিয়ে নেয় এবং সেখান থেকে বেরিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, ২০ বছর পর গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখলে নেয় তালেবান। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে তালেবান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়। অবশ্য সরকার গঠন করলেও বিশ্বের কোনো দেশই এখনও পর্যন্ত তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। এর জেরে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ ও এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থাও আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তাসহ অর্থ সাহায্য পাঠানো বন্ধ করে দেয়।
অধিকাংশ দেশ তালেবান শাসনাধীন আফগানিস্তানকে স্বীকৃতি না দিলেও তারা বারবার মানবধিকার ও নারী অধিকারের বিষয়টি তুলেছে। তাদের অন্যতম দাবি ছিল, মেয়েদের শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। তালেবান সরকারের স্বীকৃতি এবং আফগানিস্তানকে ত্রাণসাহায্য দেওয়ার ক্ষেত্রেও নারী অধিকার ও শিক্ষার বিষয়টি তারা সামনে এনেছে।
এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আফগানিস্তান শাসন করেছে তালেবান। তখন তারা মেয়েদের শিক্ষা নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল। অধিকাংশ চাকরি মেয়েরা করতে পারত না।
এবার তালেবান আবার আফগানিস্তান শাসন করার পর মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা অনেক বেশি সংখ্যায় স্কুল ও কলেজে ফিরেছে। অবশ্য তালেবান বরাবরই বলছে, তারা নারীদের অধিকারকে সম্মান করে।