খুলনার পাইকগাছা উপজেলার অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক মোকাম কপিমুনিতে ভাড়াটিয়া কর্তৃক দোকানের মালিক হওয়ার অপচেষ্টা কার্যক্রম দ্বিতীয় দফায় রুখে দিয়েছে ঐক্যবদ্ধ ব্যবসায়ী সমাজ। ভূমি আপীল বোর্ডের এক আদেশের প্রেক্ষিতে শনিবার (১৯ মার্চ) দুপুরে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম ভাড়াটিয়া বিপ্রদাস দেবনাথের পক্ষে পূর্বের দখল অবস্থা ফিরিয়ে দিতে ঘটনাস্থলে আসলে ঐক্যবদ্ধ ব্যবসায়ীসহ সূধী সমাজের প্রতিরোধের মুখে তা ব্যার্থ হয়। সর্বশেষ আদালতের আদেশকে সামনে রেখেই ভাড়াটিয়া বিপ্রদাশকে ভাড়ার অগ্রীম জামানতের টাকা ফেরৎ পাওয়া শর্তে আগামী ৫ দিনের মধ্যে দখল ছাড়ার নির্দেশনা দিয়ে উভয় পক্ষের দীর্ঘ দিনের দ্বন্দ্ব নিস্পত্তি করেন।
প্রসঙ্গত, খুলনার পাইকগাছা উপজেলার হরিঢালী ইউনিয়নের উত্তর সলুয়া গ্রামের মৃত আঃ জব্বার সরদারের স্ত্রী রোকেয়া খাতুন কপিলমুনি বাজারের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত নাছিরপুর মৌজার এস এ ২৯৫/৫ নং খতিয়ানের ৪৩২ দাগে দোকান শ্রেনীতে ০.০৩ একর রেকর্ডীয় সম্পত্তির একক মালিক থাকাবস্থায় ১৯৮৫-৮৬ সালে সরকার অন্যান্য সম্পত্তির সাথে উক্ত সম্পত্তি পেরিফেরীভুক্ত করে নেয়। এরপর রেকর্ডীয় মালিক রোকেয়া খাতুন আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সরকারের নিকট থেকে একসনা ডিসিআর (বন্দোবস্ত) গ্রহণপূর্বক ইজারা প্রদান করে আসছেন। এমতাবস্থায় রোকেয়া খাতুনের পক্ষে তার ছেলে সরদার মো: রফিকুল ইসলাম পার্শ্ববর্তী তালা উপজেলার গংগারামপুর গ্রামের মৃতঃ বসন্ত দেবনাথের ছেলে বিপ্রদাস দেবনাথকে ব্যবসা করার নিমিত্তে গত ১৪২১ সালের ১ ফাল্গুন থেকে ১৪২৮ সালের ৩০ মাঘ মাস পর্যন্ত ভাড়ায় লিখিত চুক্তিবদ্ধ হন।
এদিকে সংশ্লিষ্ট দোকান পেরিফেরীভুক্ত জমি দেখে ভাড়াটিয়া বিপ্রদাস দেবনাথ নিজের নামে একসনা বন্দোবস্ত (ডিসিআর) নেওয়ার জন্য ৪-১২৬/২০২১ কেস আবেদন করলে মূলত দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়। ভাড়ার মেয়াদ শেষ হলেও বিপ্রদাশ দোকানের দখল না ছেড়ে মালিক পক্ষকে বিভিন্ন মামলায় হয়রানী শুরু করেন। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ী বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনসহ সূধী সমাজের উপস্থিতিতে বিপ্রদাশকে দোকানের দখল ছাড়া করেন। এরপর মামলার প্রেক্ষিতে ভূমি আপীল বোর্ডের ৪নং শাখা থেকে শাখা প্রধান ও সিনিয়র সহকারী সচিব হোসনা আফরোজা স্বাক্ষরিত ৩১.৮২.০০০০.১০৪.৪.১২৬.২১-৩৩৭ স্মারকে বন্দোবস্ত আপীল মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দোকানটির পূর্বের অবস্থা আনয়নপূর্বক দখল বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে নির্দেশনা প্রদান করেন। এর প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম ঘটনাস্থলে আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে আসলে ব্যবসায়ীসহ সূধী সমাজের প্রতিরোধের মুখে পড়েন। এসময় তারা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করলে তিনি এর সুষ্ঠু মিমাংশার স্বার্থে বিপ্রদাশকে দোকানের দখল বুঝিয়ে দিয়ে আগামী ৫ দিনের মধ্যে অগ্রীম জামানতের টাকা ফেরৎ পাওয়া শর্তে দোকানের দখল ছাড়ার নির্দেশনা প্রদান করেন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কপিলমুনি হাট ও বাজার ব্যবস্থাপনা পরিষদের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান কওছার আলী জোয়ার্দ্দার, পাইকগাছা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়াউর রহমান, ব্যবসায়ী নেতা সাধন কুমার ভদ্র, কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আব্দুল আলীম, ইউপি সদস্য,সাংবাদিক,ব্যবসায়ীসহ সূধী সমাজের নের্তৃবৃন্দ।
খুলনা গেজেট/ টি আই