উধাও সয়াবিন তেল বাজারে ফিরে এসেছে। গত দু’দিনের অভিযানে নগরীর বাজারগুলোতে ভোজ্য তেলের সংকট কেটে গেছে। মুদি দোকানেও এখন পাওয়া যাচ্ছে তেল।
গত কয়েকদিন আগেও মিডিয়াতে দেখা যায়, দেশের বিভিন্নস্থানে সয়াবিন তেলের সংকট নিয়ে প্রতিবেদন। আর তা দেখে খুলনার কিছু পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ী তেলের কৃত্রিম সংকট তৈরির পায়তারা করছিল। প্রতিবেদনের জন্য তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সংকটের অগ্রীম জানান দেয় তারা। এসব খবরে খুলনার জেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। বড় বাজারের বিভিন্ন দোকান ও গোডাউনে হানা দেয় জেলা প্রশাসন। তাদের অভিযানে বের হয়ে আসে আসল তথ্য।
রেজা এন্ড ব্রাদার্সের মালিক শাহ আলম বলেন, বাজারে তেলের কোন সংকট নেই। তবে আগের দামে তেল বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেলের মূল রশদ তৈরি হয় আমেরিকা ও ব্রাজিলে। সেখানে সয়াবিন ফলের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাড়তে থাকে এ পণ্যটির দাম। ক্রমই তা সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের বাইরে চলে যেতে থাকে। ৯০ টাকার সয়াবিন তেল এখন ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দাম আমরা নির্ধারণ করি না। মূল্য নির্ধারিত হয় মূলত ঢাকা হতে। সেখানে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে হয়ত এ পণ্যটির দাম কমানো যেত। ব্যবসায়ী সমিতি দাম ও ভ্যাট কমানোর জন্য বাণিজ্যমন্ত্রীর নিকট আবেদন করেছে। সেটি মঞ্জুর হলে এ পণ্যটির মূল্য ১০ টাকা কমে যেতে পারে বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বড় বাজারের এক ব্যবসায়ী জেলা প্রশাসনকে আরও কঠোর হওয়ার আহবান জানিয়েছেন। মূল্যবৃদ্ধির অগ্রীম সংবাদ জানতে পেরে অনেক ব্যবসায়ী গোডাউন ও তাদের বাড়িতে তেল মজুদ করেছে। দাম বাড়লেই বের করে বিক্রি করবেন। তিনি প্রশাসনের অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
রাজু এ্যান্ড ব্রাদার্সের কর্ণধর মো: রাজু জানান, গত একমাস মিল থেকে তেল আসছে না। দাম বেশী দিয়ে তেল কিনতে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে যে মূল্য রয়েছে তা বাংলাদেশী টাকায় আড়াই শ’টাকারও উপরে। জেলা প্রশাসন যেভাবে প্রতিঘরে অভিযান চালাচ্ছে তাতে ব্যবসায়ীরা তেল অদুর ভবিষ্যাতে আমদানী করা বন্ধ করে দিবে। তখন সংকট আরও গভীর হবে। তাই যেখান থেকে তেলের মূল্য কার্যকর হয় সেখানে হানা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
অপরদিকে মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শরিফা সুলতানার নেতৃত্বে খুলনা মহানগরীর দৌলতপুরে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে বেশি দামে টিসিবি পণ্য খোলা বাজারে বিক্রির অপরাধে নগরীর খালিশপুর দৌলতপুর জুট মিল গেইট এলাকার লিপি স্টোর ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়েছে। ৩ এপিবিএন খুলনার সহযোগিতায় এ অভিযান সম্পন্ন হয়েছে। অভিযানে ব্যাবসায়ী প্রতিনিধি ও ক্যাব সদস্য উপস্থিত ছিলেন। জনস্বার্থে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ইব্রাহিম হোসেন জানান, দোকান থেকে ৫ বোতল তেল উদ্ধার করা হয়েছে। আরও ২০ বোতল তেল তিনি পৃথক পাত্রে ঢেলে খোলা তেল হিসেবে বিক্রি করেছেন। জরিমানা আদায়ের পর দোকান মালিককে সতর্ক করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এএ/এমএম