ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানের মধ্যে রাশিয়াজুড়ে প্রায় প্রতিদিনই যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ হচ্ছে। এর মধ্যে রোববার (৬ মার্চ) একদিনেই দেশটিতে প্রায় সাড়ে চার হাজার বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ।
প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ পর্যবেক্ষণ করে এমন স্বাধীন একটি গ্রুপের বরাত দিয়ে সোমবার (৭ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও আলজাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার রাশিয়াজুড়ে মোট ৫৬টি শহর থেকে ৪ হাজার ৩৬৬ জন বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ১৭০০ বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে শুধু রাজধানী মস্কো থেকেই। এছাড়া সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে ৭৫০ জন এবং অন্যান্য শহর থেকে আরও ১ হাজার ৬১ জনকে আটক করা হয়েছে।
রুশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোববার ৫ হাজার ২০০ মানুষ যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন এবং এর মধ্যে সাড়ে ৩ হাজার বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। তবে ওভিডি-ইনফো নামে একটি মানবাধিকার সংস্থা বলছে, রাশিয়ার মোট ৫৬টি শহর থেকে কমপক্ষে ৪ হাজার ৩৬৬ জন বিক্ষোভকারীদের আটক করা হয়েছে।
সম্প্রতি রাশিয়াতে বিক্ষোভের ওপর নানারকম বিধি-নিষেধ আরোপ করা সত্ত্বেও ইউক্রেনে হামলার প্রতিবাদে বহু বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। হামলা শুরুর পর থেকে গত ১১ দিনে দশ হাজারের মতো রুশ বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে।
ওভিডি-ইনফো’র একজন মুখপাত্র জর্জিয়া থেকে বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ‘স্ক্রু একেবারে পুরো শক্ত করে লাগানো হচ্ছে। বিশেষ করে আমরা দেখতে পাচ্ছি সেনাবাহিনী তথ্য চেপে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা ব্যাপক প্রতিবাদ দেখতে পাচ্ছি – এমনকি সাইবেরিয়ার শহরগুলোতেও যেখানে এতো বেশি সংখ্যক মানুষকে আটকের ঘটনা খুবই বিরল।’
এর আগে কারাগারে থাকা সরকারের সমালোচক আলেক্সি নাভালনি প্রতিদিন বিক্ষোভ করার ডাক দিয়ে বলেছেন, রাশিয়ানদের ‘ভীতু কাপুরুষদের জাতি’ হওয়া উচিত নয়। যদিও গত কয়েক বছর ধরে নতুন কিছু আইন প্রণয়নের কারণে রাশিয়াতে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বেশি কঠিন হয়ে পড়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, যদিও রুশ আইনে অনুমতিপত্র বা নিষেধাজ্ঞা শব্দগুলোর ব্যবহার এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে… কিন্তু বাস্তবে যেকোনো ধরনের সমাবেশের জন্য অনুমোদন নিতে হয়।
রাশিয়া ছাড়াও আরও অনেক দেশে যুদ্ধবিরোধী প্রতিবাদ হয়েছে। রাশিয়ার মিত্র দেশ হিসেবে পরিচিত কাজাখস্তানেও হাজার দু’য়েক মানুষ একটি শান্তি সমাবেশে অংশ নিয়েছে। এছাড়া বেলারুশ, বেলজিয়াম এবং লন্ডনেও যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে।