চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও কমেছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে প্রায় সাড়ে ১১ লাখে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে ব্রাজিল, যুক্তরাষ্ট্র, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪৪ কোটি ৬৩ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬০ লাখ ১৯ হাজার।
সোমবার (৭ মার্চ) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪ হাজার ১১৮ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে দেড় হাজার। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬০ লাখ ১৯ হাজার ১৮৪ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১১ লাখ ৫৭ হাজার ৯১৩ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে দুই লাখের বেশি। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ কোটি ৬৩ লাখ ৪৪ হাজার ২৮ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৪৩ হাজার ৬১৩ জন এবং মারা গেছেন ১৬১ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪৪ লাখ ৫৬ হাজার ২৬৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৮ হাজার ৯৫৭ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৪৪ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৭৯ হাজার ৮৬৩ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৬৯ লাখ ৪১ হাজার ৬৫৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ২৮১ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় নতুন সংক্রমণ ও প্রাণহানি অনেকটা কমেছে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৯০৩ জন এবং মারা গেছেন ১৮৩ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮ কোটি ৯ লাখ ১৭ হাজার ৫২২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৯ লাখ ৮৪ হাজার ২০ জন মারা গেছেন।
এছাড়া জার্মানিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৪ হাজার ৫৪৮ জন এবং মারা গেছেন ৪৬ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৫৮ লাখ ২৮ হাজার ৪৫৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ২৪ হাজার ৭১৬ জন মারা গেছেন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২১৯ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৫ হাজার ৯৬১ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ৯০ লাখ ৪৯ হাজার ১৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৫২ হাজার ২০৭ জনের।
করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭০ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৪ হাজার ১২৪ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ২৯ লাখ ৬৭ হাজার ৭৭ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ ১৫ হাজার ১৩৩ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ হাজার ৬৭১ জন এবং মারা গেছেন ১৭০ জন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৫৭ জন এবং মারা গেছেন ১০৫ জন। ইন্দোনেশিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ হাজার ৮৬৭ জন এবং মারা গেছেন ২৫৪ জন।
গত একদিনে ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৫ হাজার ৩২৮ জন এবং মারা গেছেন ৩২ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৩০ লাখ ৫৭ হাজার ৩২৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৩৯ হাজার ২৭৫ জন মারা গেছেন। গত একদিনে পোল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৬৯৭ জন এবং মারা গেছেন ১০ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় চিলিতে ১২২ জন, আর্জেন্টিনায় ৬০ জন, ইরানে ২০১ জন, জাপানে ১৮৫ জন, রোমানিয়ায় ২৯ জন, ফিলিপাইনে ১৪৪ জন এবং পেরুতে ১১৩ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ২২০ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ১৯ হাজার ৮২৪ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।