ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে হামলার শিকার বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’র ২৮ নাবিককে উদ্ধার করে নিরাপদে রাখার পর এখন তাদের রোমানিয়ায় নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। একইসঙ্গে হামলার ঘটনায় নিহত জাহাজটির থার্ড প্রকৌশলী মো. হাদিসুর রহমানের লাশও নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
জানা গেছে, গতকাল (বৃহস্পতিবার) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জাহাজ থেকে ২৮ নাবিককে উদ্ধার করে ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরের কাছেই একটি বাঙ্কারে নিয়ে রাখা হয়। তার আগে জাহাজটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
মাসুদ বিন মোমেন জানান, বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’র ওপর কারা হামলা করেছে- সে বিষয়ে আমরা এখনো নিশ্চিত নই। তবে ঘটনাটি তদন্ত করে জানানোর আশ্বাস দিয়েছে রাশিয়া।
গত ২৬ জানুয়ারি ভারতের মুম্বাই বন্দর থেকে তুরস্ক হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরে পৌঁছায় বাংলাদেশের পতাকাবাহী ও রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধি। কিছুদিন পরই সিরামিকের কাঁচামাল ‘সিমেন্ট ক্লে’ নিয়ে জাহাজটির ইতালির রোভেনা বন্দরের উদ্দেশে যাত্রার কথা ছিল। কিন্তু রাশিয়া ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে। এতে বন্দরেই আটকে যায় জাহাজটি।
তবে যুদ্ধাবস্থা এড়াতে জাহাজটিকে সেখানে পৌঁছানোর পরই পণ্য বোঝাই না করে দ্রুত ফেরত আসার জন্য নির্দেশনা দেন শিপিং করপোরেশনের কর্মকর্তারা। শেষ মুহূর্তে বন্দরের পাইলট না পাওয়ায় ইউক্রেনের জলসীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশের এই জাহাজ।ওই জাহাজে ২৯ জন নাবিক ছিলেন। ২ মার্চ রাতে জাহাজে রকেট হামলা হয়। এতে জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান নিহত হন। পরে আটকেপড়া এই জাহাজের ২৮ জন নাবিককে উদ্ধার করে সেফ জোনে নিয়ে যাওয়া হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে (বাংলাদেশ সময়) জাহাজটি থেকে নাবিকদের ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের কাছে নিরাপদ একটি স্থানে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে ইউক্রেনের পাশের দেশ পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে সবাইকে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যুদ্ধের পরিস্থিতি বিবেচনা করে এখন তাদের মলদোভা হয়ে রোমানিয়ায় নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।