যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে আটকে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ রকেট হামলার শিকার হয়েছে। এতে জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মোঃ হাদিসুর রহমানের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি বরগুনার বেতাগি উপজেলায়।
জাহাজে থাকা এক নাবিক জানান, বাংলাদেশ সময় ২ মার্চ রাত সাড়ে ৯ টার দিকে জাহাজটি এয়ার স্ট্রাইক (বিমান হামলা) হইছে। এতে জাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। তবে সবার সাহসী পদক্ষেপে আগুন নেভানো সম্ভব হয়।
জাহাজটিতে ২৯ জন বাংলাদেশি নাবিক রয়েছেন। তাদের অবস্থার কথা এখনও জানা যায়নি। জাহাজটি বর্তমানে ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দর চ্যানেলে নোঙর করা আছে। রকেট হামলার পরে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা জানার চেষ্টা চলছে।
বিএসসি সূত্রে জানা গেছে, বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজটির মালিক বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন। সিরামিকের কাঁচামাল ‘ক্লে’ পরিবহনের জন্য জাহাজটি তুরস্ক থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় পৌঁছায়। সেখান থেকে কার্গো নিয়ে ইতালি যাওয়ার কথা ছিল। জাহাজটি বন্দরে পৌঁছানোর পরদিন ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরু হয়। জাহাজটি ইউক্রেন থেকে সিরামিক ক্লে নিয়ে ইতালির রেভেনা বন্দরে যাবার কথা ছিল। তবে যুদ্ধাবস্থা এড়াতে জাহাজটিকে সেখানে পৌঁছানোর পরই পণ্য বোঝাই না করে দ্রুত ফেরত আসার জন্য নির্দেশনা দেয় শিপিং কর্পোরেশন।
শেষ মুহূর্তে বন্দরের পাইলট না পাওয়ায় ইউক্রেনের জলসীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশের এই জাহাজ। এরপর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে বন্দরটিতে বিভিন্ন দেশের আরো প্রায় ২০টি জাহাজ আটকে আছে।
বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের নির্বাহী পরিচালক পীযূষ দত্ত জানিয়েছিলেন, জাহাজটি ২৩শে ফেব্রুয়ারি অলভিয়া বন্দর ছেড়ে আসার কথা ছিল।
তিনি বলেছিলেন, “কিন্তু এর মধ্যে যুদ্ধাবস্থা শুরু হয়ে যায়, তখন আমরা জাহাজটিকে কোনো পণ্য না নিয়েই বন্দর ছেড়ে চলে আসতে বলি। কিন্তু যেখানে জাহাজটি নোঙ্গর করেছে সেখান থেকে মূল সাগরে আসতে অন্তত ৬০ নটিক্যাল মাইল পথ অতিক্রম করতে হবে, এবং স্থানীয় পাইলট ( পথনির্দেশক ) ছাড়া সেটি করা সম্ভব নয়।”
বাংলাদেশের নৌ পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরি বলেন, জাহাজের বাকী ২৮ জন ক্রুর সবাই অক্ষত আছেন বলে তারা জানতে পেরেছেন এবং তারা এখনো জাহাজে আছেন। জাহাজের ক্যাপ্টেনকে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে, তারা জাহাজে থাকবেন, নাকি বেরিয়ে যাবেন।
খুলনা গেজেট/এএ/এমএম