ইউক্রেনে গত ৬ দিনের রুশ অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ বেসামরিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং এই অভিযান যদি অব্যাহত থাকে, সেক্ষেত্রে এই সংখ্যা আরও বাড়বে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক অঙ্গসংস্থা ইউনাইটেড নেশনস হাই কমিশন ফর রেফিউজি’র (ইউএনএইচসিআর) ইউক্রেন প্রতিনিধি ক্যারোলিনা লিন্ডহোম বিলিং মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে ক্যারোলিনা বলেন, ‘গত ছয়দিনে ইউক্রেনে কত সংখ্যক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, সে সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য তথ্য এখনও আমরা পাইনি, তবে আমাদের হিসেব বলছে, এ পর্যন্ত ইউক্রেনে বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বেরিয়েছেন অন্তত ১০ লাখ মানুষ।’
‘তাদের অনেকেই ইতোমধ্যে পার্শ্ববর্তী কোনো দেশে আশ্রয় নিয়েছেন এবং অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে সীমান্তের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।’
ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশ্যে ছুটে চলা ইউক্রেনীয়দেরকে সহায়তা দিতে দেশটির সীমান্ত এলাকাগুলোতে ইউএনএইচসিআর তৎপরতা বাড়িয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা। পাশাপাশি তিনি বলেন, দ্রুত এই যুদ্ধের অবসান না হলে পরিস্থিতি আরও বিপর্যয়কর হবে।
‘গত ৬ দিনে ইউক্রেনে সীমাহীন মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে এবং পরিস্থিতির উন্নতি না হলে তা আরও বাড়বে।’
এদিকে, একই দিন সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র শ্যাবিয়া মান্তু জানান, গত ছয় দিনে ইউক্রেন থেকে দেশটির সীমান্তবর্তী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন ৬ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ।
দীর্ঘ দুই মাস ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় ২ লাখ সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে দেশটির পূর্বাঞ্চলে সেনা অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন ভ্লাদিমির পুতিন। তার ভাষণ সম্প্রচারের পরপরই রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায় এবং তড়িৎগতিতে ইউক্রেনের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পাশপাশি চতুর্দিক থেকে দেশটির ভেতরে প্রবেশ করতে শুরু করে রুশ সেনাবাহিনী।
ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রুশ বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধ হচ্ছে ইউক্রেনের বাহিনীর। তবে গত দুই দিন ধরে সংঘাত তীব্র হয়ে উঠেছে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভে। রুশ বাহিনীর রকেট হামলায় ইউক্রেনের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ এই শহরটিতে ইতোমধ্যে শতাধিক বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই